জাতীয়

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ, প্রত্যাশা জাপানের

ঢাকা, ০৭ জুন – জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাংলাদেশ সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছেন তিনি।

মঙ্গলবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, আগামী বছরের শেষ দিকে নির্বাচন হওয়ার কথা। সুতরাং, আমাদের হাতে আরও ১৮ মাস সময় আছে। এ নির্বাচন নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিদিন খবর প্রচার হচ্ছে। নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের দিক থেকে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেছি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নতুন আইন প্রণয়ন ও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মতো বিষয়। তাই আশা করবো, বাংলাদেশ সরকার গতবারের তুলনায় এবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পদক্ষেপ নেবে।

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ডিক্যাব টক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বলেন, গতবার নির্বাচনে কিছু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। তাই আমি কিছু সরকারি কর্মকর্তাকে বলেছি, জাপান একটি ভালো, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করে। আমি এ বিষয়টিই বলে যেতে চাই।

এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা ‘অনেক বড়’ বলে মন্তব্য করেন ইতো নাওকি।

বাংলাদেশে অর্থনীতি ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের প্রশংসা করে তিনি বলেন, জাপানের ৬৮ শতাংশ কোম্পানি এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে, কারণ তারা বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ব্যবসার ভালো সম্ভাবনা দেখছে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য। জাপানি কোম্পানিগুলোর কাছে বাংলাদেশ কেন এত আকর্ষণীয়? এর একটি কারণ অবশই প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা।

বাংলাদেশ চলতি দশকে এশিয়ার দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হতে যাচ্ছে এবং ভৌগলিকভাবে এর অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। অবকাঠামোও দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। এ ছাড়া পদ্মা সেতু বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়াবে।

জাপান ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইংগিত দিচ্ছে। এদেশের মাথাপিছু আয় বর্তমানে ২ হাজার ৮০০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। শিগগিরই এটা ৩ হাজার ডলারে পৌঁছাবে।

জুলাই থেকে মে পর্যন্ত সময়ের রপ্তানির চিত্র যদি দেখেন, সেখানে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির খবরে এসেছে। আমি আশা করছি, এ অর্থবছরেও বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে জাপানে সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারকের অবস্থান ধরে রাখবে।”

জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ এ বছরের শেষ নাগাদ শেষ হতে যাচ্ছে। এটাই জাপানের গড়ে তোলা প্রথম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এটি জাপানের অর্থনৈতিক অঞ্চল নয়, এটি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল।

জাপান সরকার নিয়ম শিথিল করায় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানির কথাও এখন ভাবা হচ্ছে বলে জানান ইতো নাওকি।

তিনি বলেন, “দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সূবর্ণজয়ন্তীতে বলব, জাপান বাংলাদেশের পাশেই থাকবে। বাংলাদেশের আরও টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য এই উন্নয়ন যাত্রা অব্যাহত থাকবে।”

কোভিডের কারণে বন্ধ হওয়া ঢাকা-নারিতা ফ্লাইট শিগগিরই চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।

তিনি বলেন, “ঢাকা থেকে নারিতা সরাসরি ফ্লাইট শিগগিরই আবার চালু হবে। মহামারীর কারণে ফ্লাইট স্থগিত ছিল। আশা করছি, এ বছর সরাসরি ফ্লাইট চালু হবে।

ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈন উদ্দীন।

সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এম এস, ০৭ জুন

Back to top button