বিচিত্রতা

‘নিজেকে বিয়ে’ করবেন ভারতীয় তরুণী!

সোলোগামি বা স্ব-বিবাহ পশ্চিমা দেশগুলোতে প্রচলিত হলেও ভারতীয় উপমহাদেশে খুব একটা পরিচিত নয়। কিন্তু সেই ধারা ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছেন ভারতের এক তরুণী। আগামী ১১ জুন হিন্দুরীতি মেনে ‘নিজেকেই বিয়ে’ করতে চলেছেন তিনি। কেশামা বিন্দু নামে ২৪ বছর বয়সী ওই তরুণীর দাবি, এটাই হতে চলেছে ভারতে প্রথম স্ব-বিবাহের ঘটনা।

নিজের অভিপ্রায় সম্পর্কে বলতে গিয়ে গুজরাটের ভাদোদারা শহরের ওই তরুণী জানান, তিনি বিয়ের গৎবাঁধা রীতি ভেঙে ‘সত্যিকারে ভালোবাসা খুঁজে না পাওয়া’ মানুষদের প্রেরণা জোগাতে চান।

নিজেকে উভকামী পরিচয় দেওয়া বিন্দু সাংবাদিকদের বলেন, জীবনের একপর্যায়ে আমি বুঝতে পারি, আমার কোনো রাজকুমারের প্রয়োজন নেই। কারণ, আমি নিজেই নিজের রানি। আমি বিয়ের দিন চাই, কিন্তু পরের দিন নয়। তাই আগামী ১১ জুন নিজেকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেদিন আমি কনের সাজে সাজবো, আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেবো, বন্ধুরা আমার বিয়েতে যোগ দেবে এবং তারপর আমি বরের সঙ্গে না গিয়ে নিজের বাড়িতেই ফিরে আসবো।

ভারতীয় এ তরুণী জানিয়েছেন, ‘বর-বিহীন’ এই বিয়েতে সম্মতি দিয়েছেন তার মা। বিন্দু বলেন, আমি বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য একজন পণ্ডিত (পুরোহিত) ঠিক করেছি। আমি লক্ষ্য করেছি, পশ্চিমা দেশগুলোর মতো ভারতে স্ব-বিবাহ জনপ্রিয় নয়। তাই, আমি এই ধারা শুরু এবং অন্যদের অনুপ্রাণিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বিন্দুর কথায়, মানুষ আমার চিন্তা-ভাবনা পছন্দ না-ও করতে পারে। কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসী যে, ঠিক কাজটাই করছি। সহজ প্রচারণার জন্য এমনটি করছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তরুণী বলেন, তিনি এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে বেশ জনপ্রিয়।

বিন্দুর ভাষ্যমতে, আমি শুধু গৎবাঁধা রীতিগুলো ভাঙতে এবং অন্যদের নিজেকে ভালোবাসতে অনুপ্রাণিত করতে চাই। এমন অনেক মানুষ রয়েছে, যারা ভালোবাসা খুঁজে পেতে কিংবা একাধিকবার বিয়েবিচ্ছেদ করতে করতে ক্লান্ত। একজন উভকামী হওয়ায় আমি আগে এক পুরুষ ও এক নারীর প্রেমে পড়েছিলাম। কিন্তু এখন আমি নিজেকেই সবটুকু ভালোবাসা দিতে চাই।

তরুণীর দাবি, তার বিয়েই হতে চলেছে ভারতে প্রথম স্ব-বিবাহের ঘটনা। তবে ভারতীয় আইনে এটি বৈধ হবে না বলে জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতীয় হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ অ্যাডভোকেট কৃষ্ণকান্ত ভাখারিয়া বলেন, ভারতীয় আইন অনুযায়ী আপনি নিজেকে বিয়ে করতে পারবেন না। একটি বিয়েতে দুজন থাকতে হবে। এখানে সোলোগামি বৈধ নয়।

চন্দ্রকান্ত গুপ্ত নামে আরেক প্রবীণ আইনজীবী বলেন, হিন্দু বিবাহ আইনে ‘পতি-পত্নীর যেকোনো একজন’ পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ- বিয়ে করার জন্য অবশ্যই দুজন থাকতে হবে। সোলোগামি কখনোই আইনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে না।

এম ইউ/০২ জুন ২০২২

Back to top button