ব্যবসা

গাড়ি-হোম অ্যাপ্লায়েন্সসহ বিলাসী পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি

ঢাকা, ০১ জুন – বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসী পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের ফলে এ খাতে নতুন এলসি খোলা কমছে। গত দেড় মাসে কমেছে ১২ শতাংশ। আগামী দিনে আরও কমবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে কিছু পণ্যের আমদানিও কমেছে। তবে সার্বিকভাবে আমদানি ও এলসি খোলা বেড়েছে।

সূত্র জানায়, গত বছরের আগস্ট থেকেই বাজারে ডলারের সংকট দেখা দেয়। ওই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার ছেড়ে টাকার মান ধরে রাখছিল। কিন্তু গত মার্চ থেকে আর পারছিল না। তখন ডলারের দাম বাড়া শুরু করে। মে মাসে ডলার সংকট প্রকট হওয়ায় এর দামও বেড়েছে।

ডলারের সংকট প্রকট হওয়ার কারণে গত বছরের শেষদিক থেকেই কিছু পণ্যের আমদানির এলসি খোলা কমতে থাকে। এখন ওইসব পণ্যের আমদানি কমেছে। ১১ এপ্রিল অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি সব পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ এলসি মার্জিন আরোপ করা হয়। ১০ মে বিলাসী পণ্যে ৭৫ শতাংশ এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি সব পণ্যে ৫০ শতাংশ মার্জিন আরোপ করা হয়। এর প্রভাব পড়ে এলসি খোলায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এপ্রিল থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত দেড় মাসে বিলাসী পণ্যের এলসি খোলা কমেছে ১২ শতাংশ। এর মধ্যে রয়েছে ফল, কোমল পানীয়, চকলেট, প্রসাধনসামগ্রী, আসবাবপত্র প্রভৃতি।

এদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে সার্বিকভাবে আমদানি বেড়েছে ৫০ শতাংশ এবং এলসি খোলা বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। একই সময়ে পরিমাণগতভাবে পণ্যের আমদানি কমেছে ৮ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য বাড়ায় ডলারের অঙ্কে এলসি খোলা ও আমদানি বেড়েছে।

আলোচ্য সময়ে চালের ৬১ শতাংশ, পেঁয়াজের ৫, ফলের সাড়ে ৬ ও ডালে সাড়ে ১১ শতাংশ এলসি খোলা কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধিতে অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের আমদানি কমেছে ১৯ শতাংশ। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে ৪ শতাংশ, ট্রাক্টর পাওয়ার টিলারের এলসি খোলা কমেছে ২৬ দশমিক ৪১ শতাংশ, আমদানি কমেছে ১৫ শতাংশ। একই সময়ে ইলেকট্রনিকসামগ্রীর এলসি কমেছে সাড়ে ৪ শতাংশ, আমদানি কমেছে ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, গাড়ির এলসি খোলা কমেছে ৩৩ শতাংশ, তবে আমদানি বেড়েছে ২০ শতাংশ, সামুদ্রিক ডিজেল ইঞ্জিনের এলসি খোলা কমেছে ৭৭ শতাংশ, আমদানি কমেছে ৮৫ শতাংশ, অন্যান্য যন্ত্রপাতির এলসি খোলা কমেছে ৬ শতাংশ, আমদানি কমেছে ২১ শতাংশ।

এদিকে গত অর্থবছরে ৮১ কোটি ৭০ লাখ ডলারের চাল, ৬৫ কোটি ৮০ লাখ ডলারের ডাল, ১৭৮ কোটি ৬০ লাখ ডলারের ভোজ্যতেল, ১২৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের তৈল বীজ, ৪০ কোটি ডলারের মসলা, ৩১ কোটি ডলারের দুধ ও আইসক্রিম, ১৫৫ কোটি ৮০ লাখ ডলারের গম, ১৭৩ কোটি ডলারের চা, কফি ও অন্যান্য উপকরণ, ৩৮ কোটি ডলারের মধু ও অন্যান্য উপকরণ, ৩১ কোটি ডলারের ডিম ও ডেইরি পণ্য আমদানি করা হয়েছে। ২৫ মে ১৩৫টি বিলাসী পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতেও বিলাসী পণ্যের আমদানি কিছুটা কমবে।

সূত্র : যুগান্তর
এম এস, ০১ জুন

Back to top button