সিগারেটের ফিল্টার থেকে ৭০০০’র বেশি ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়
ঢাকা, ০১ জুন – ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে মোট ৭১ বিলিয়ন সিগারেট শলাকা উৎপাদিত হয়েছে। সিগারেটের ফেলে দেওয়া ফিল্টার প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে প্রায় এক দশক সময় নেয়, আর মিশে যাওয়ার সময় এ থেকে সাত হাজারের বেশি রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়।
মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের আরবান প্রাইমারি হেলথ প্রকল্প কেন্দ্রে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২২ উপলক্ষে ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত এক আলোচনাসভায় এ তথ্য উঠে আসে।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্য পরিবেশের যথেষ্ট ক্ষতি করে। তামাক চাষ ফসলি জমি ও পরিবেশের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করে। এজন্য জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার্থে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে।
ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন দি ইউনিয়ন বাংলাদেশের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ডা. নায়লা পারভীন, হেড অব প্রোগ্রামস-বাংলাদেশ, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস মো. শফিকুল ইসলাম।
ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার উম্মে জান্নাতের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার শারমিন আক্তার রিনি।
‘তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনাসভায় স্বাগত বক্তব্য দেন তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. শরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের ধুমপায়ীরা তাদের নিজেদের অজান্তেই শরীরে দীর্ঘমেয়াদী রোগের বাসা বাঁধিয়ে ফেলেন। এতে কেবল তিনি নিজের ক্ষতিই নয়, পরোক্ষ ধুমপান দ্বারা তার আশপাশের মানুষদেরও ক্ষতি করেন সমানভাবে।
ডা. নায়লা পারভীন বলেন, তামাকজাত দ্রব্য নারী-পুরুষ উভয়ের স্বাস্থ্যগত ক্ষতির কারণ হলেও নারীদের ক্ষেত্রে এটি আরও ভয়াবহ। কারণ এটি নারীদের হরমোনাল ব্যালান্স ও নারীর রিপ্রোডাকটিভিটির ক্ষতি করে। এতে নারীদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়। অথচ ইদানিংকালে নারী ধুমপায়ীর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আমাদের মতো দেশের জন্য ভয়াবহ। ধুমপানের ফলে প্রিম্যাচিউড় বাচ্চা প্রসব ও জন্মগত ত্রুটি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।
অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন বলেন, ধুমপান সবার জন্যই ক্ষতিকর হলেও কম বয়সীদের জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর। এটি তাদের শারীরিকভাবে ক্ষতির পাশাপাশি আর্থিক ও মানসিকভাবেও পিছিয়ে দেয়। উপরন্তু তামাকজাত দ্রব্য দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশেরও জন্যও ক্ষতিকর।
ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনের ওপরও জোর দেন।
এর আগে ৩১ মে সকালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি)-এর উদ্যোগে আয়োজিত র্যালিতে ঢাকা আহছানিয়া মিশন অংশগ্রহণ করে।
সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর
এম এস, ০১ জুন