দক্ষিণ এশিয়া

শ্রীলঙ্কায় কারফিউ প্রত্যাহার

কলম্বো, ১৪ মে – চরম অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কার পাঁচবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে ফের দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মাঝেই খবর পাওয়া গেলো শনিবার (১৪ মে) দুপুর ১২ টা থেকে পরবর্তী ১২ ঘন্টার জন্য দেশটিতে গত কয়েকদিন ধরে জারি রাখা কারফিউ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, গত ৯ মে জারি করা এই কারফিউ নিত্য-প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করার জন্য গত ১২ মে এবং ১৩ মে-তেও কয়েক ঘন্টার জন্য তুলে নেওয়া হয়েছিল।

দেশটির অর্থনীতি কার্যত অচল হয়ে পড়ার কারণে গত প্রায় দুই মাস ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলে আসছিল। গত সোমবারও (৯ মে) বিক্ষোভে নামেন লাখো জনতা। সেখানে সরকার সমর্থকরা আন্দোলনকারীদের মারধর শুরু করলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। শুরু হয় দাঙ্গা।

প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগের দাবিতে চলা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন পরিশেষে ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে চলে যায়। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাক্ষের পদত্যাগ সত্ত্বেও আন্দোলন চালিয়ে যায় বিক্ষুব্ধরা। আন্দোলন-বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের জমানো ক্ষোভ উগড়ে দেয় শ্রীলঙ্কার সব শ্রেণিপেশার মানুষ।

দুই দিনের সহিংসতায় দেশটিতে নয়জন নিহত হন। সংঘর্ষে আহত হন আরও তিনশ জনের মতো। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে দেশটির সরকার। এমনকি বিশৃঙ্খলাকারীদের দেখামাত্রই গুলি করারও নির্দেশ দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে সাধারণ মানুষের আন্দোলন-বিক্ষোভ ঠেকাতে কয়েক দফায় কারফিউ জারি করা হয় কলম্বোতে। আটকও করা হয় শতাধিক মানুষকে।

আন্দোলনের মুখে মাহিন্দা রাজাপাক্ষে পদত্যাগ করলেও এখনো প্রেসিডেন্ট পদ আঁকড়ে আছেন তার ভাই গোতাবায়া রাজাপাক্ষে।

১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর শ্রীলঙ্কাকে এবারই চরম অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এর বড় কারণ বৈদেশিক মুদ্রার অভাব। করোনা মহামারি সামাল দিতে না পারায় আরও নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয় দেশটিতে। যার ফলে বেড়ে যায় তেল, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সাধারণ মানুষ।

দেশের কঠিন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন রনিল বিক্রমাসিংহে। ৭৩ বছর বয়সী এই নেতা আগামী মঙ্গলবার পার্লামেন্টে অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই মন্ত্রিসভা গঠন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি সংকট মোকাবিলায় প্রধান বিরোধী দল সামাজি জানা বালাওয়েগয়ার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসাকে সরকারের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে, শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দল সামাগি জানা বালাওয়েগায়া (এসজেবি)। সামাজি জানা বালাওয়েগায়ার কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড নতুন প্রধানমন্ত্রীর নেত্বাধীন অন্তর্বর্তী জোট সরকারে যোগ দেওয়ার পরিবর্তে দেশে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সূত্র: দেশ রূপান্তর
এম ইউ/১৪ মে ২০২২

Back to top button