জাতীয়

বিদ্যুৎ উৎপাদনে এগিয়ে বেসরকারি খাত

সঞ্চিতা সীতু

ঢাকা, ১২ মে – বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেসরকারি অংশীদারিত্ব বেড়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য বলছে, এর আগে সবসময় সরকারি অংশীদারিত্ব বেশি থাকলেও এবার বেসরকারি অংশীদারিত্ব সরকারি অংশকে ছাড়িয়ে গেছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব বলছে, এখন আমদানিসহ দেশের মোট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষমতা ২২ হাজার ৩১ মেগাওয়াট। এরমধ্যে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন করছে ৪৬ ভাগ (১০ হাজার ১৪৬ মেগাওয়াট)।

সরাসরি দেশীয় উদ্যোক্তাদের বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে ৪৩ ভাগ (৯ হাজার ৪৮১ মেগাওয়াট)। এর বাইরে যৌথ উদ্যোগের বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে ৬ ভাগ (১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট)। ওই যৌথ কেন্দ্রের অর্ধেক মালিকানাও সরকারের। বাকি অর্ধেক বিদেশের। এই হিসাবে আরও তিনভাগ বেসরকারি খাতেই পড়ে।

আবার সরকার ভারত থেকেও ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে, যা মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৫ ভাগ। অর্থাৎ এটিও সরাসরি সরকারের মালিকানায় নেই।

এসব হিসাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারি অংশীদারিত্ব ৪৯ ভাগ ও বেসরকারি ৫১ ভাগ।

এর আগে বেসরকারি অংশীদারিত্ব সবসময় ৪০ ভগের নিচেই ছিল।

বিদ্যুৎ খাতের পরিকল্পনায় দেখা যায়, এখন ৩২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন। এরমধ্যে সরকারি ১১টি কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৪ হাজার ৩৩৮ মেগাওয়াট। বেসরকারি ১৮টি কেন্দ্রের ক্ষমতা হবে ৪ হাজার ৮৯৮ মেগাওয়াট।

আরও তিনটি যৌথ উদ্যোগের কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। যেগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ৩ হাজার ৭৩১ মেগাওয়াট। এখানেও অর্ধেক মালিকানা ভিন্ন কোনও দেশের। ওই অংশের মুনাফা সরকারি কোষাগারে জমা হবে না।

সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে উৎপাদনে কোনও সমস্যা না হলেও সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।

অন্যদিকে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মুনাফার একটি অংশ সরাসরি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়। যা দিয়ে সরকার অন্য উন্নয়ন কাজও করে। এজন্য মূলত সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকেই উৎসাহিত করা হয়।

সরকার কেন্দ্র নির্মাণে বিনিয়োগের পরও কীভাবে বেসরকারি অংশগ্রহণ বাড়লো তা খতিয়ে দেখার দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাত ভারসাম্য হারাতে পারে।

জানতে চাইলে পিডিবির এক কর্মকর্তা জানান, সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি অংশগ্রহণ বেড়েছে। তারা না হলে আজকের বিশাল বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে উঠতো না।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এখন সরকারি ও যৌথ উদ্যোগের কিছু বড় কেন্দ্র উৎপাদনে আসতে শুরু করেছে। এগুলো উৎপাদনে এলে সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুৎ দিতে পারবো বলে আশা করছি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বললেন, ‘একটি নির্দিষ্ট শ্রেণিকে সুবিধা দিতেই বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এসব বেসরকারি কেন্দ্র থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে পিডিবি লোকসানের কথা বলে। এতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথাও ওঠে। আর সেই বাড়তি দামের বোঝা গিয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপর।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এম ইউ/১২ মে ২০২২

Back to top button