জাতীয়

এক বছর পর খালেদার সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাক্ষাৎ

ঢাকা, ০৪ মে – ঈদের দিন মঙ্গলবার (৩ মে) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’য় যান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সাত সদস্য।

সাক্ষাৎ শেষে ‘ফিরোজা’ থেকে বেরিয়ে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনা মহামারির প্রায় দুই বছর পর আজ আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা একসঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম। এই সাক্ষাৎ আমরা আগেও করেছি, যখন তিনি কারাগারে ছিলেন না, গৃহে অন্তরীণ ছিলেন না। ওই সময় প্রতিবছরই আমরা ঘরের বাইরে লনে বসে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম।’

‘আমাদের এবারের এই সাক্ষাৎ নিঃসন্দেহে বেশি আনন্দময় ছিল না। তবে আনন্দ যতটুকু ছিল, তা এ জন্য যে, প্রায় বছরখানেক পর আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারলাম। তার কথা শুনতে পারলাম এবং আমাদের শুভেচ্ছা এবং তিনি যেন সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন এই প্রার্থনার কথা তাকে আমরা জানাতে পারলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ। এর মধ্যে তিনি আগের মতো এখনও দেশের মানুষের অবস্থার কথা জানতে চেয়েছেন।’

‘এখনকার সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি আমাদের মাধ্যমে জেনেছেন। সবসময় খবরের কাগজে পড়ছেন। তারপরও আমাদের কাছ থেকে শুনেছেন। তার যে উদ্বেগ সেটাও প্রকাশ করেছেন।’

‘দেশবাসীকে ঈদের ‍শুভেচ্ছা’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে সমগ্র দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি তার জন্য দেশবাসীর দোয়া চেয়েছেন। তিনিও দেশবাসীর জন্য দোয়া করেছেন বলে জানিয়েছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের মানুষ যেন ভালো থাকে, সুস্থ থাকে, গণতন্ত্রকে যেন ফিরে পায়, মানুষ যেন তাদের অধিকার ফিরে পায়— এমন প্রার্থনাও করেছেন বেগম খালেদা জিয়া।’

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি এখনও সুস্থ নন। ডাক্তাররা এই বিষয়ে বলতে পারবেন। আমি এটুকু বলতে পারি যে, এখন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। হেঁটে খাবার টেবিলে যেতেও তার খুব কষ্ট হয়। এটাই বাস্তবতা।’

রাত ৮টায় মহাসচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ‘ফিরোজা’য় ঢোকেন। তারা সেখানে এক ঘণ্টা ছিলেন।

স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী দূরত্ব বজায় রেখে দোতলায় দলীয় প্রধানের সঙ্গে তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এর আগে খালেদা জিয়া তার বোন সেলিনা ইসলাম ও ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ নিকট স্বজনদের নিয়ে দুপুরের খাবার খান।

সর্বশেষ গত বছরের কোরবানির ঈদের দিন খালেদা জিয়ার দেখা পেয়েছিলেন এই নেতারা। গত রোজার ঈদে বিএনপি চেয়ারপারসন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় নেতাদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়নি।

দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। মহামারি শুরুর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় বিএনপি প্রধানকে।

এরপর থেকে গুলশানের ওই বাসায়ই থাকছেন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। দলের নেতাকর্মী বা সমর্থক কেউই তার সাক্ষাৎ পান না।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
এম এস, ০৪ মে

Back to top button