ব্যবসা

মিল ঠিকঠাক, ভোক্তা অধিদপ্তরের টার্গেট তেলের ডিলার সিন্ডিকেট

ঢাকা, ০৬ এপ্রিল – সয়াবিন ও পাম তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিদপ্তরের নানামুখী উদ্যোগে বাজারে স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করেছে। ডিলারের বিক্রয় আদেশের (এসও) ১৫ দিনের মধ্যেই তেল সরবরাহ করেছেন মিলমালিকরা। তবে সমস্যা রয়ে গেছে ডিলার পর্যায়ে। ডিলারদের সিন্ডিকেট ভাঙতে ইতোমধ্যে সব জেলা প্রশাসকের কাছে ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলোর ডিলারদের তালিকা পৌঁছানো হয়েছে।

আজ বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে ভোজ্যতেল আমদানিকারক এবং মিল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে এসব তথ্য জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। বৈঠকে সিটি গ্রুপ, টি কে গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

তারা বিশ্ব বাজারের সঙ্গে ভোজ্য তেলের বাজার সমন্বয় করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান। দ্রুত সময়ে বাজার সমন্বয় না হলে বাজারে সমস্যা তৈরি হবে বলে মনে করেন তারা।

এরপর ভোক্তা অধিদপ্তর মহাপরিচালক বলেন, আমদানিকারকরা আশ্বস্ত করেছেন সরকার নির্ধারিত মূল্য এবং নির্ধারিত সময়ে বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ ঠিক রাখবেন। মিল মালিক বা পরিবেশকদের মধ্যে এখন আর সমস্যা নেই। ভোজ্য তেলের বাজার বিশৃঙ্খলার কারণ হিসেবে যেসব তথ্য জানা যাচ্ছে, এরমধ্যে মালিকপক্ষের সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে ডিলারদের মধ্যে যে সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে তা এখনো সমাধান হয়নি। এজন্য মিল মালিকদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে কেউ চাইলেই মিল মালিকদের কাছ থেকে তেল কিনতে পারবেন। ডিলারদের থেকে কিনতে হবে না।

বৈঠকে জানানো হয়, প্রতিদিন দেশে পাঁচ হাজার টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। আর এর যোগান হিসেবে পর্যাপ্ত মজুদ মিলমালিকদের কাছে আছে। কমবেশি প্রতিদিন পাঁচ হাজার টন তেল বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।

সফিকুজ্জামান বলেন, ভ্যাট প্রত্যাহারের সময় ১৬ মার্চ প্রতি টন অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম ছিল ১ হাজার ৪০৭ ডলার, তা এখন সময়ের ব্যবধানে ১ হাজার ৮৮০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছে। বাড়তি দামে তেল আমদানির ফলে আমদানিকারকদের মধ্যে দাম বাড়ানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা রোজার ঈদের পর মে মাসে সমন্বয় করা হবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, দেশের ৯৫ ভাগ ব্যবসায়ী সাধু, আর ৫ ভাগ অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়ে থাকে। ভোক্তা অধিদপ্তর চাচ্ছে সুষ্ঠু বাজারব্যবস্থা, যাতে সব আমদানিকারক এবং মিলমালিকরা আইনের মধ্যে থাকেন। যখন সরকার থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেন। এর মধ্যে অনেক সমস্যা থাকবে যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। আর যারা বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভোক্তার মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান আরও জানান, সরকার ইতোমধ্যে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রেখে, অন্যান্য সব ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে। ফলে নতুন আমদানিতে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এ ক্ষেত্রে প্রতি লিটার তেলে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনায় করে আগামী রোজার ঈদের পরে মে মাসে সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ভোজ্য তেলের জাম সমন্বয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

সূ্ত্র: সমকাল
এম ইউ/০৬ এপ্রিল ২০২২

Back to top button