বলিউড

‘ট্রিপল আর’ সিনেমার গল্পের নেপথ্যে প্রকৃত নায়ক যারা

হায়দ্রাবাদ, ৩১ মার্চ – ‘বাহুবলি’ সিনেমা দিয়ে বিশ্ব কাঁপানো এস এস রাজামৌলি এবার নির্মাণ করেছেন ‘ট্রিপল আর: রুদ্রম রণম রুধিরাম’। মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে এই সিনেমা। গড়ছে একের পর এক রেকর্ড।

তারকাবহুল ‘ট্রিপল আর’ সিনেমার প্রধান দুই চরিত্র আল্লুরি সীতারামা রাজু ও কোমারাম ভীম। এই চরিত্র দু’টিতে অভিনয় করেছেন রাম চরণ ও জুনিয়র এনটিআর। কিন্তু যাদেরকে নিয়ে সিনেমার গল্প প্রকৃত পক্ষে তারা কে ছিলেন?

আল্লুরি সীতারামা রাজু ছিলেন একজন ভারতীয় বিপ্লবী। মাত্র ১৮ বছর বয়সে সন্যাস জীবন বেছে নিয়েছিলেন। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ১৯২২ সালে রাম্পা বিদ্রোহ বা মান্যম বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। রাম্পা বিদ্রোহ ছিল ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে উপজাতিদের স্বাধীনতা সংগ্রাম। আল্লুরি সীতারামা রাজু ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির গোদাবরী এজেন্সিতে এই আদিবাসী বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন। এই বিদ্রোহটি মূলত মাদ্রাজ বন আইন, ১৮৮২ পাসের বিরুদ্ধে ছিল, যা বনভূমিতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের অবাধ চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল এবং তাদের ঐতিহ্যবাহী পোডু কৃষি ব্যবস্থায় জড়িত হতে বাধা দিয়েছিল। ১৯২৪ সালে আল্লুরি সীতারামা রাজুকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর তাকে গাছে বেঁধে জনসম্মুখে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার সাহসীকতার জন্য পরবর্তী সময়ে তাকে ‘মান্যম বীরুরু’ বা ‘ফরেস্ট হিরো’ উপাধি দেওয়া হয়।

‘ট্রিপল আর’ সিনেমার আরেকজন চরিত্র কোমারাম ভীম। জেল থেকে পালিয়ে আসামের চা বাগান অঞ্চলে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। গোন্ড সম্প্রদায়ের সঙ্গে বসবাস করতেন। সেখানে তিনি আল্লুরি সীমারামা রাজুর উত্থানের কথা শুনে অনুপ্রাণিত হন এবং গোন্ড সম্প্রদায়কে রক্ষার দায়িত্ব নেন। ১৯০০ সালের শুরুর দিকে হায়দরাবাদের শেষ নিজাম এবং স্থানীয় জমিদারদের শোষণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। শেষ নিজাম নিরস্ত্র আদিবাসীদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালায়। শস্য ও অন্যসব জিনিসের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করে, যার কারণে আধিবাসীদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ছিল। ভীমের স্লোগান ছিল ‘জল জঙ্গল জমিন’।

তিনি ১৯২৮ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত নিজামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। পাশাপাশি নিজাম থেকে স্বাধীন গোন্ড রাজ্যের দাবি জানান। অন্যদিকে বিদ্রোহ দমন করতে না পেরে নিজাম সরকার কোমারাম ভীমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। জানা যায়, ১৯৪০ সালে বিদ্রোহের তিন বছর পর পুলিশ ভীমকে খুঁজতে জোদেঘাট ঘিরে ফেলে। সেখানে দেশীয় অস্ত্র হাতে অপেক্ষা করছিলেন ভীম ও সহযোগীরা। আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করলে তাদের ওপর গুলি চালায় নিজাম বাহিনী। সেখানেই ভীমের মৃত্যু হয়।

‘ট্রিপল আর’ সিনেমার গল্প লিখেছেন রাজামৌলির বাবা কেভি বিজয়েন্ত্র প্রসাদ। রাম চরণ ও জুনিয়র এনটিআর ছাড়াও সিনেমাটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন— আলিয়া ভাট, অজয় দেবগন, রে স্টেভেনসন, অলিভিয়া মরিস প্রমুখ। ৪৫০ কোটি রুপি বাজেটের এই সিনেমা প্রযোজনা করেছেন ডিভিভি নায়া। বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত ৬০০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে ‘ট্রিপল আর’।

এন এইচ, ৩১ মার্চ

Back to top button