ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য পাড়ার মাস্তানদের মতো: রিজভী
ঢাকা, ২৭ মার্চ – সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের (ডিএমপি) বক্তব্য ‘পাড়া-মহল্লার মাস্তানদের মতো’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
রবিবার বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডিএমপি কমিশনারের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শুনেছি যে ওনার (ডিএমপি কমিশনার) এক্সটেনশন হয়েছে। আবার পরবর্তীতে এক্সটেনশন নেয়ার জন্যই কী, শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য কথাগুলো বলেছেন? আমলাদের বলা হয় একটি রাষ্ট্রের স্টিল ফ্রেম। সেই স্টিল ফ্রেম আজকে দেখছি একেবারে গদগদ হয়ে গুনগান করছেন একটি অবৈধ সরকারের। আর সেটি করতে গিয়ে সভ্যতা, সুরুচি সমস্ত কিছুকে জলাঞ্জলি দিয়ে বখাটে মাস্তানরা যেভাবে কথা বলে, সেভাবে… পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার মুখ থেকে যদি এমন কথা বের হয়! তাহলে এটা কত বড় নেক্কারজনক হতে পারে?’
রিজভী বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রের চরিত্র কেমন, তার চেহারা কেমন? এটা যদি আপনারা বুঝতে চান। তাহলে দেখতে হবে ওই রাষ্ট্রের কর্মরত অফিসাররা কেমন? তাদের বৈশিষ্ট্য কেমন? এটা দেখলেই রাষ্ট্রের চরিত্রটা বোঝা যায়। আজকে দেখুন বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের কথাবার্তা। তাদের আচার-আচরণেই বুঝতে পারবেন এই রাষ্ট্র কী ভয়ঙ্কর রাষ্ট্র!’
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ‘ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সরকারের একজন কর্মকর্তা যে কথা বলেছেন, গতকাল এটা আমার কাছে মনে হয়েছে… এ রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। এ রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে গেছে’।
রিজভী বলেন, ‘যিনি স্বাধীনতার ঘোষকের সহধর্মীনি, যিনি এ দেশের বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডারের সহধর্মীনি। সেই নেত্রী সম্পর্কে যে অশ্লীল, অসভ্য কথাবার্তা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার। আমার কাছে মনে হয়েছে, শেখ হাসিনা তিনি যেমন তার বিরোধী শক্তিকে আক্রমণ করতে কোনো ধরনের সভ্যতার যে পরিসীমা সেটা যেমন মানেন না। ঠিক একই ভাষায় কথা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার। এটা হাছান মাহমুদ, ওবায়দুল কাদের বললে এক কথা ছিল। এই কমিশনার তো বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়েও চাকরি করেছেন’।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যা করছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রশংসনীয়। গুম, খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদের সহায়তা করছে। গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যিনি তার বাবা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মানবিক কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে তার নির্দেশে মহামারী করোনাকালে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যা করেছে তা দৃষ্টান্তমূলক। আসলে রাজনীতি হওয়া উচিৎ মানবকল্যাণে। সেটাই করে যাচ্ছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন’।
বিগত আন্দোলন সংগ্রামে গুম, খুনের শিকার পরিবারের সদস্যদের বাৎসরিক শিক্ষা বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)।
সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
জেডআরএফ’র রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির সদস্য সচিব ডা. পারভেজ রেজা কাকনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রিহ্যাবিলিটেশন কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেডআরএফ’র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, একেএম জহিরুল ইসলাম, শামীমা রহিম, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, শফিকুল ইসলাম, আসিফ হোসেন রচি প্রমুখ।
সূত্র : দেশ রূপান্তর
এম এস, ২৭ মার্চ