জাতীয়

ড. কামাল হোসেনই গণফোরামের সভাপতি

ঢাকা, ১২ মার্চ – বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা, প্রখ্যাত আইনজীবী ড. কামাল হোসেনকে গণফোরামের নবনির্বাচিত সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে গণফোরামের অনুষ্ঠিত বিশেষ কাউন্সিলে ড. কামাল হোসেনকে ফোরামের নতুন সভাপতি হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয়। পরে ফোরামের সদস্যরা সে প্রস্তাবে সমর্থন জানান।

কাউন্সিলে জানানো হয়, ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত করার পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যদের তালিকা নির্ধারণে ২০ সদস্যের একটি সাবজেক্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই সাবজেক্ট কমিটি আলোচনার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাছাইয়ে কাজ করবেন।

কাউন্সিলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিক উল্লাহ রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রস্তাব পাঠ করেন।

এ সময় ফোরামের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- মোস্তাক আহমেদ, অ্যাডভোকেট আলতাফ হোসেন, এরআর জাহাঙ্গীর, নাজমুল ইসলাম সাগর প্রমুখ।

এদিকে কাউন্সিলকে ঘিরে গণফোরামের বিবাদমান দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংগঠনটির একটি অংশের কাউন্সিল আয়োজনকে কেন্দ্র করে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন অংশের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খানসহ অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ এসে একপক্ষকে ঘটনাস্থল থেকে বের করে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

সূত্র জানায়, গণফোরামের কাউন্সিলকে ঘিরে দলটির বিদ্যমান দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর একটি অংশ জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে কাউন্সিলের আয়োজন করে। মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন অপরাংশ প্রেস ক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মোকাব্বিরদের অভিযোগ, সকাল ১০টার দিকে ড. কামাল হোসেনের অংশের গণফোরাম কাউন্সিলের জন্য যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন অপরাংশের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের ভেতরে ঢুকে কাউন্সিলে হামলা করে। তারা চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে।

ঘটনার উভয় অংশের সিনিয়র নেতা ড. কামাল হোসেন কিংবা মোস্তফা মোহসীন মন্টু, সুব্রত চোধুরী কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

হামলার বিষয়ে মোকাব্বির খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মোস্তফা মহসীন মন্টুর ইন্ধনে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাউন্সিলের আয়োজন করেছি। এটা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতকারী কাউন্সিলে হামলা করে আমাকেসহ আরও অনেককে আহত করেছে। এটা গণতন্ত্রের ওপর হামলা। গণফোরাম থেকে বহিস্কৃতরা এ হামলা চালিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে মোস্তফা মহসীন মন্টু গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর উল্টো অভিযোগ করে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাদের মানববন্ধনে মোকাব্বিরের লোকেরা হামলা করে। বিষয়টি নিয়ে মোকাব্বির খানের কাউন্সিল স্থলে গিয়ে জানতে চাইলে ঝামেলা বাধে।

সুব্রত বলেন, তারা আমাদের মানববন্ধনে কেন হামলা করেছে সেটা জানতে গেলে তখন কিছু একটা হয়ে থাকতে পারে। তবে আমি সেখানে ছিলাম না। বিস্তারিত বলতে পারব না।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার এ কাউন্সিলকে অবৈধ ঘোষণা করে মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরাম।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর এক চিঠিতে দুই অংশকে ঐক্য করে পথচলার তাগাদা দেন গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন । কিন্তু সেই ঐক্য আর হয়নি। এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেও সমাধান মেলেনি।

সূত্র : যুগান্তর
এন এইচ, ১২ মার্চ

Back to top button