জাতীয়

সরকারের দিন শেষ হয়ে এসেছে : ফখরুল

ঢাকা, ০৮ মার্চ – দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে দাবি করে সেই দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে আওয়ামী সরকারকে হঠানোর বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে আমাদের দুর্ভাগ্য এদেশের মানুষ সহ্য করতে করতে অনেক সহ্য করতে শিখে গেছে। কলকাতায় ট্রামের ভাড়া ৪ পয়সা বাড়লে কলকাতা বন্ধ হয়ে যায়। জিনিসপত্রের দাম বাড়লে কলকাতা বন্ধ হয়ে। আর এরা ১৪ বছর ধরে মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করছে কিন্তু আমরা এখনও সেভাবে বন্ধ করতে পারছি না। আমাদের বন্ধ করতে হবে। এরা যে অন্যায়, নির্যাতন-নিপীড়ন করছে তাকে বন্ধ করতে হলে, মানুষকে বাঁচাতে হলে, দুর্ভিক্ষ যেন না হয় তার ব্যবস্থা করতে হলে এ সরকারকে হঠানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তাই আসুন আমরা সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে এ ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।

তিনি বলেন, সারাদেশে আজকে একটা প্রকৃত নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। মানুষ বলতে পারে না। তারা মুখোশ পড়ে টিসিবির ন্যায্যমূল্যের ট্রাকের পেছনে গিয়ে দাঁড়ায়। লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। ধাক্কাধাক্কি করে কোনো রকমে এক লিটার তেল, কিছু চাল-ডাল আর আলুর জন্য। বাণিজ্যমন্ত্রী যেদিন বললেন, জিনিসপত্রে দাম কমাও তা না হলে তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেদিনই পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ১০ টাকা বেড়ে গেল। এর অর্থ এ সরকারের বাজারের ওপরে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এর প্রধান কারণ বাজারের যত সিন্ডিকেট সেই সিন্ডিকেটের প্রধান হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আজকে সারাদেশে যত চাঁদাবাজি, ঘুষ খাওয়া সবকিছুর মূল হচ্ছে এ আওয়ামী লীগ। এ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই তারা জনগণের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার চেষ্টা করেছে। ৭২-৭৫ সালেও একই অবস্থা ছিল। সেদিন তাদের অযোগ্যতা আর দুর্নীতির কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।

মির্জা ফখরুল বলেন, সোমবার (৭ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী আরব আমিরাত যাওয়ার আগে কিছু বক্তব্য রেখেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, করোনার পরে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সব জায়গায় জিনিসপত্রে দাম বেড়েছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ কবে থেকে শুরু হলো? আর কবে থেকে এদেশের মানুষ চিৎকার করছে যে, তেলের দাম কমাও, চালের দাম কমাও, ডালের দাম কমাও, আমরা আর পারছি না। গত দুই বছর ধরে করোনার সময় যে চুরি, যে ডাকাতি আপনারা করেছেন স্বাস্থ্যখাতে। করোনাকে কেন্দ্র করে প্রণোদনার নামে বড় লোকদের সরকারি টাকা দিয়েছেন, গরিবকে আরও গরিব করেছেন, সে কথার জবাব কে দেবে প্রধানমন্ত্রী।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের দিন শেষ হয়ে এসেছে সুতরাং ভালোয় ভালোয় পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।

জাতীয়তাদাবী যুব দলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্ত্তাজুল করিম বাদরু, সহ-সভাপতি জাকারিয়া মঞ্জুর, আলী আকবর চুন্নু, ইউসুফ বিন জলিল কালু, মোনায়েম মুন্না, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, জাকির হোসেন নান্নু, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আহমেদ মিলন, কামাল উদ্দিন, আলী আশরাফ, সহ-সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাফিজ নাহিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহীন, ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি রেজাউল কবির পল প্রমুখ।

সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর
এম এস, ০৮ মার্চ

Back to top button