শিক্ষা

শিক্ষকের নামে মিথ্যা অপবাদ, ছাত্রলীগ নেতাসহ বহিষ্কার ১০

ময়মনসিংহ, ০৬ মার্চ – ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসানসহ ১০ জনের বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার (৫ মার্চ) তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর দিনভর আলোচনা শেষে বিকেলে এমন সিদ্ধান্ত হয় একাডেমিক কাউন্সিলে। পরে সাংবাদিকদের কাছে লিখিতভাবে জানান কলেজ কর্তৃপক্ষ।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বলেন, ‘গত ২ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ৫৩ ব্যাচের ছাত্র এবং কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসান আমার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে সার্জারি বিষয়ের মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষা চলাকালীন অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে ডিএসবি (ডিস্ট্রিক্ট স্পেশাল ব্রাঞ্চ) পুলিশের একজন সদস্যকে ডেকে এনে তাদের সামনে বসিয়ে রাখেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় তিনি সরকারিবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকেন। নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী সরকারি দলীয় ছাত্রদের ফেল করান।’

২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেটের সামনে ৫৩ ব্যাচের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে একদল শিক্ষার্থী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এ সকল অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের পক্ষ থেকে গাইনি বিভাগের প্রধান তাইয়্যুবা তানজিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এই ঘটনার পর থেকে ছাত্রছাত্রীদের এমন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে আন্দোলনে নামে কলেজের শিক্ষকরা। তারা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে মিথ্যা অপবাদের বিচার দাবি করেন। এছাড়াও শিক্ষকরা চারদিনের কর্মবিরতি পালন করেন।

শনিবার (৫ মার্চ) তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত প্রতিবেদনে ডা. আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানিসহ অন্যান্য অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বলেন, এমন মিথ্যা অভিযোগ শিক্ষকের মর্যাদা ক্ষুন্নের পাশাপাশি কলেজের সম্মান নষ্ট হয়েছে। তাই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর দিনভর একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে কলেজের ১০ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।

অধ্যক্ষ আরও জানান, আব্দুল্লাহ আল হাসান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত মিথ্যা অভিযোগ করায় তাকে তিন বছরের জন্য ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় শিক্ষার্থী ফায়াদুর রহমান আকাশ, তামান্না তাসকিনকে দুই বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ সময় তারা ছাত্রাবাসে থাকতে পারবে না।

মানববন্ধনে স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণের জন্য সুনীতি কুমার দাশ, সানবীম খান, মহিদুল হক, তানভীন হাসান, কাশফী তাবরীজ, বাপ্পু কর্মকার এবং সাখাওয়াত হোসেন সিফাতকে এক বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ সময় তারা ছাত্রাবাসে থাকতে পারবে না।

এছাড়াও অনিচ্ছাকৃতভাবে মিছিলে অংশ নেয়ায় আট ছাত্রকে মুচলেকা দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়।

সূত্র : রাইজিংবিডি
এন এইচ, ০৬ মার্চ

Back to top button