বিচিত্রতা

যেখানে নারীরা শুধু স্বামীকে না, বিয়ে করে তার পুরো পরিবারকেই!

বিয়ের পর নিজের মনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকা নারীদের আমরা বলি, তারাই তো বাপের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে আসা প্রথম ব্যক্তি নয়। তাদেরকে আমরা বেয়াদব, অহংকারী আরও কত খেতাব দিই।

বিয়ের পর কীভাবে বেডরুম সাজাতে হবে, কাপল ফটোশুটের জন্য শ্রেষ্ঠ জায়গা কোনগুলো, কিংবা হানিমুনে কোন দেশে যাওয়া যেতে পারে—অনলাইনে এমন অসংখ্য গাইডলাইন পাওয়া যাবে। কিন্তু সম্ভবত এমন একটিও আর্টিকেল পাওয়া যাবে না, যেখানে কোনো নতুন পরিবারে গিয়ে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে!

“আপনাকে আপনার পরিবার থেকে সরিয়ে এই নতুন পরিবারে নিয়ে আসা হচ্ছে। আপনার স্বামীর পরিবারে!” ন্যাশনাল ডেটাবেজ অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন অথরিটি (নাডরা)-র একজন কর্মকর্তা বললেন।

আমি দেখলাম, আক্ষরিক অর্থেই তিনি একেকটা ডকুমেন্ট থেকে আমার আগের পদবী সরিয়ে দিচ্ছেন। “এখন আপনি তাদের (স্বামীর) পরিবারের অংশ,” তিনি জানালেন।

এসব কথা শুনে আমার চোখ ছলছল করে উঠল। আমি চেষ্টা করতে লাগলাম স্বাভাবিক থাকার। আমার স্বামী অবশ্য পরে মজা করে বলেছিল, বিয়ে পড়ানোর সময় কাজী সাহেব আমাকে যতটা না আবেগাপ্লুত করে দিয়েছিলেন, তারচেয়ে ঢের বেশি দিয়েছেন নাডরার ওই অফিসার।

এই একটি ঘটনাই আমাকে বিয়ের অনুষ্ঠানের এক বছর আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে উদ্বুদ্ধ করল। আমি যখনই সুযোগ পেলাম—বান্ধবী, বান্ধবীর বান্ধবী, কিংবা পরিবারের নারী সদস্য, সবার কাছ থেকে শুনে নিতে থাকলাম তাদের বিয়ে-পরবর্তী অভিজ্ঞতার বয়ান। বিশেষত যাদেরকে বিয়ের পর স্বামীর জয়েন্ট ফ্যামিলিতে গিয়ে মানিয়ে নিতে হয়েছে, তাদের সঙ্গে বেশি কথা বললাম।

এক বছর পর যখন বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো এবং আমি একটি নতুন জীবন ও পরিবার পেলাম, সেখানে আমার কিছুটা সমস্যায় পড়তে হলো ঠিকই, তবে আমি ক্রমশ থিতু হতে লাগলাম। কথোপকথনগুলো আমাকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে খুবই সাহায্য করেছে, যেজন্য আমি কৃতজ্ঞ। আবার কিছু কিছু পরিস্থিতিতে আমাকে আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছে কোথায় পিছু হটতে বা চুপ থাকতে হবে। মোদ্দা কথা, ওইসব আলাপচারিতায় যে গল্পগুলো আমি শুনেছি, সেগুলো আমার মনের মধ্যে গেঁথে গেছে।

যেমন ধরুন, ২৭ বছর বয়সী এক সদ্যবিবাহিতা আমাকে বলেছিল, নতুন বাড়িতে তাকে নাকি পনির খেতে দেওয়া হয় না। কথাটা শুনতে যত অদ্ভুতই লাগুক না কেন, শতভাগ সত্যি। তার শ্বশুর নাকি একটা হোয়াটসঅ্যাপ ফরওয়ার্ডের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, পনির খেলে ক্যান্সার হয়। আর সে কারণেই এমন নিষেধাজ্ঞা!

“তাই এখন আর আমরা পনির খেতে পারি না। আমরা যদি কোনোদিন ভুলেও চিজ অমলেট খেয়ে ফেলি, তৎক্ষণাৎ সব প্রমাণ লোপাট করতে হয়,” আমাকে বলছিল সে।

আমার মুখে অবিশ্বাসের ছায়া দেখতে পেয়ে সে আরও যোগ করে, “আমি কিন্তু সিরিয়াস। আমি স্মোকিং করছি এটা আমার শ্বশুর দেখে ফেললেও কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু পনির খাচ্ছি সেটা কোনোভাবেই তাকে দেখতে দেওয়া যাবে না।”

এরপর আমরা খুব হাসলাম ব্যাপারটা নিয়ে। যখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরকম অদ্ভুত ব্যাপারস্যাপারের সঙ্গে সে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে কীভাবে, তার উত্তরটা আমার মনে খুব জোরে নাড়া দিল—”এটা যে ওর (ওই নারীর স্বামীর) বাড়ি।”

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের একটি আর্টিকেল থেকে জানতে পারলাম, ইউনিভার্সিটি অব কেনটাকির ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন নাকি সদ্য-বিবাহিতা নারীদের ডিপ্রেশন নিয়ে দুটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। ২০১৬ সালে হওয়া একটি গবেষণায় অংশ নেয় ২৮ জন নারী। তাদের মধ্যে অর্ধেকই জানিয়েছে, বিয়ের পর তারা আশাহত হয়েছে বা ডিপ্রেসড অনুভব করেছে। এছাড়া ২০১৮ সালে ১৫২ জন নারীকে নিয়ে অনুষ্ঠিত আরেকটি গবেষণায় দেখা যায়, ১২ শতাংশ নারীই বিয়ের পর ডিপ্রেশনে ভুগছে।

দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ নারীর মনোজগতে বিয়ের মাত্র কয়েক সপ্তাহ বা মাস বাদেই ডিপ্রেশন হানা দেয়। মাহিন নামের ৩০ বছর বয়সী এক নারী বলে, “একবার যখন আপনি হানিমুন থেকে ফিরে ডিনার শেষ করবেন, জীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। আপনি নিজেকে আবিষ্কার করবেন অন্য কারও বাড়িতে, এবং ভাবতে থাকবেন, ‘আচ্ছা বেশ, আমি নিজের বাড়িতে যাব কবে!’ অথচ এটিও কিন্তু আপনার একটা বাড়ি, কিন্তু একই সঙ্গে তা নয়।”

২৯ বছর বয়সী হেনাকে অবশ্য শুরু থেকেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়, স্বামীর বাড়ি আসলে তার নিজের বাড়ি নয়। “আমি একটা খুবই রক্ষণশীল সমাজ থেকে এসেছি, যেখানে মেয়েদের খুব কম বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। আমার বেশ মনে আছে, আমার বয়স তখন ২১ বছর, আর আমার শাশুড়ি প্রথম দিনই আমাকে সাফ জানিয়ে দিলেন, এটা আমার নিজের বাড়ি নয়,” হেনা জানায়।

আমি যখন হেনাকে জিজ্ঞেস করলাম কীভাবে তাকে এরকম একটা কথা বলা হয়েছিল, সে হাসতে হাসতে বলল, “ওহ, তিনি (হেনার শাশুড়ি) আক্ষরিক অর্থেই আমাকে বললেন, এটা আমার বাড়ি নয়, এটা তাদের বাড়ি, এবং আমাকে তাদের বেঁধে দেওয়া সব নিয়মকানুনই মেনে চলতে হবে।”

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, হেনার এই অভিজ্ঞতা খুব একটা বিরল নয়। পাকিস্তান কিংবা সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় একজন নারীর জন্য নিজের বাড়ি ছেড়ে আসা মানে কেবল স্বামীর সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করাই নয়। এর মানে প্রায়ই এমন যে, আপনাকে একটি নতুন পরিবারে ‘অ্যাডজাস্ট’ করতে হবে—খাওয়াদাওয়া, ব্যক্তিগত অভ্যাস থেকে শুরু করে সাধারণ জীবনাচার, সবখানেই পরিবর্তন আনতে হবে। তাছাড়া একটা অঘোষিত নিয়মও রয়েছে—স্বামীর বাড়ির আবহকে পাল্টে দিতে যেয়ো না, বরং নিজেকে পাল্টাও!

একজন ‘ভালো’ পুত্রবধূর বৈশিষ্ট্য হলো: সে কম জায়গা দখল করবে, নিজের মনের কথা মুখ ফুটে বলবে না, এবং শুধু স্বামী নয় বরং স্বামীর পুরো পরিবারেরই আজ্ঞাবহ হয়ে থাকবে।

২৯ বছর বয়সী ডেন্টিস্ট সিদ্রা তার স্বামীর সঙ্গে একটি ঝগড়ার স্মৃতিচারণা করে। সে বলে, দেবরকে সকালের খাবার দেওয়া প্রসঙ্গে নাকি ওই ঝগড়ার সূত্রপাত।

“ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, আমার তাকে খাবার বেড়ে দেওয়ার কথা নয়। কিন্তু আমার স্বামী আমাকে বলে, ধর্মে না থাকলেও, এটাই নাকি তাদের সংস্কৃতি। এই ব্যাপারটা আমার কাছে ভালো লাগেনি। ঘরের বাইরে কাজ তো আমিও করি। স্বামীর আগেই আমাকে আমার কর্মস্থলে পৌছাতে হয়। তারপরও স্বামীর কাজকর্ম করে দেওয়ার ব্যাপারে আমি কখনো অভিযোগ তুলিনি। কিন্তু তার ভাইয়ের কাজকর্মও যে আমিই করব, তা হতে পারে না। কিন্তু আমাদের বাদানুবাদ বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যে, পরদিন আমি আমার মায়ের কাছে চলে যাই।”

সিদ্রার পরিস্থিতিকে খানিকটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ের বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আদতেই, পাকিস্তানে ধর্মের চেয়েও এগিয়ে রাখা হয় সংস্কৃতিকে।

“আমাকে শুধু আমার স্বামীর দেখভাল করলেই হবে না, তার বাবা-মায়ের দেখভালও করতে হবে। কিন্তু এই ব্যাপারটা আমার মেজাজ গরম করে দেয়। আমার শাশুড়ির জায়গায় যদি আমার নিজের মা থাকতেন, তাহলে সবসময় আমার উপর নির্ভর করে না থেকে তিনি বরং আমাকে আমার কাজে সাহায্য করতেন,” গত বছর বিয়ে করা সামরা আমাকে ফোনে জানায়। “যখন বলা হয় শাশুড়ি তোমার মায়ের মতো, সেটা আসলে একটা ফাঁকি। শাশুড়ি কখনো মা হয় না।”

যখন আমি আমার বান্ধবী আমিনার কাছে জানতে চাইলাম, নতুন বউ হিসেবে আমাকে কোন উপদেশটি সে দেবে, সে আমাকে বলল, “তুমি তোমার নিজের মতো থাকো। আমি নিজে তা থাকতে পারিনি। আমার আমার শ্রেষ্ঠ সংস্করণ হয়ে থাকতে চেয়েছি, কিন্তু সেই প্রচেষ্টা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। কিছুদিনের মধ্যেই আমি হাঁপিয়ে উঠেছি। কিন্তু এতে আবার আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা হতাশ হয়েছে। তাই শুরু থেকেই নিজের মতো থাকো। তাদেরকে কোনো সুযোগ দিও না অভিযোগ করার যে বিয়ের পর তুমি বদলে গেছ।”

ডিপ্রেশন, পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন এবং মানসিক ও শারীরিক ট্রমার বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের ট্যাবু অল্প কিছুদিন হলো ভাঙতে শুরু করেছে। আমার নিজেরও এটা মেনে নিতে অস্বস্তি হয়েছে যে আমি ডিপ্রেসড। আমার চারপাশের নতুন পরিবেশ একদমই পারফেক্ট ছিল। তাই আমি অনেকসময় আমার ছোট ও বড় ডিপ্রেশনগুলোকে অস্বীকার করতে চেয়েছি। চেয়েছি অকৃতজ্ঞ না হতে।

একটি নতুন শহরে গিয়ে জীবন শুরু করা প্রসঙ্গে বীনা আমাকে বলে, “স্বামীর প্রতি তুমি এক ধরনের ক্রোধ অনুভব করবে। কী সুন্দরভাবেই না সে তার জীবন চালিয়ে যায়। তার জীবনে তো বড় কোনো পরিবর্তনই আসে না। কিন্তু আমার জন্য সবকিছুই একদম বদলে গেছে, কিন্তু আমার স্বামী সেগুলো এমনকি স্বীকারও করতে চায় না।

“পুরুষরা কি বুঝতে পারে তারা কতটা ভাগ্যবান? তারা যখন খুশি দরজা খুলে তাদের মাকে দেখে আসতে পারে। কিন্তু আমাকে ছুটির দিনের অপেক্ষা করতে হয়, টিকিট বুক করতে হয়।”

কিন্তু আমি একটা ব্যাপার বুঝতে পেরেছি, কেউই আপনাকে বিয়ের পরের জীবনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করে তুলতে পারবে না। কোনো কথা বা গল্পই যথেষ্ট নয়। আপনি হুট করে এমন একটা পরিবারে গিয়ে পড়বেন, যে পরিবারে সবাই সবাইকে ভালোভাবে চেনে, জানে ও বোঝে, পরস্পরের খামতি ও অস্বস্তিকর ব্যাপারগুলো সম্পর্কেও ধারণা রাখে। অথচ আপনার অবস্থা সেখানে ডাঙায় তোলা মাছের মতো।

এসব কাহিনি শোনার পর মনে হয়েছে, আমার শ্বশুরবাড়ি-ভাগ্য বেশ ভালো। আমাকে অতটা বাজে পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। কিন্তু তারপরও প্রায়ই একটা অদ্ভুত অনুভূতি কেন জেঁকে বসে আমার মনে?

শুরুতে আমি আমার এ ধরনের অনুভূতিকে দাবড়ি মেরে চুপ করিয়ে দিতাম। নতুন পরিবারে আসার আগে যেসব হরর স্টোরি আমি শুনেছি, আমার সঙ্গে তো তেমন কিছুই হচ্ছে না! কিন্তু পরবর্তীতে আমার অনেক সময় লেগেছে বুঝতে যে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কী করা উচিত না-উচিত তা এত আগ্রহ নিয়ে জানার বদলে, বিবাহিত নারীদের কাছ থেকে আমার এ কথাগুলো শোনা বেশি জরুরি ছিল—কোনো কোনো বিকেলে হুট করেই কাঁদতে বসা স্বাভাবিক, স্বামীকে তার মায়ের পাশে বসে টিভি দেখতে দেখে হিংসা অনুভব করাও স্বাভাবিক, এবং শ্বশুরবাড়ির সব সদস্যের সঙ্গে ডিনার করতে বসে নিজের মাঝে হারিয়ে যাওয়াও একদমই স্বাভাবিক।

খুব ভালো হতো, যদি এই কথাগুলো কেউ আমাকে আগে থেকেই জানিয়ে দিত। তাহলে আমাকে আমার নিজের দুঃখ বা শোকগুলোকে অস্বীকার করতে হতো না। ওই খারাপ লাগার মুহূর্তগুলো হয়তো দীর্ঘস্থায়ী ছিল না, কিন্তু সেগুলো সত্যি ছিল। আর সবচেয়ে বড় কথা, আমি কোনোভাবেই কারও প্রতি অকৃতজ্ঞ হচ্ছিলাম না, এবং আমি আমার নতুন জীবন বা আমার স্বামীকেও কোনো অংশে কম ভালোবাসতাম না। কিন্তু তবু, আমার নতুন বাড়িতে কিছু জিনিসের অভাব আসলেই ছিল—মায়ের কণ্ঠস্বর শুনে সকালে ঘুম থেকে ওঠা, বাবার হাত থেকে ফলের প্লেট নেওয়া, রাতে ঘুমানোর আগে বোনের সঙ্গে অন্তরঙ্গ আলাপ, কিংবা ভাইয়ের সঙ্গে শেয়ার করা অজস্র ইনসাইড জোক।

আমরা এমন একটা সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চাই, যেখানে বিয়ের পর নিজের পরিবারের থেকে আলাদা হওয়ার সুবাদে নারীদের মনে জাগা দুঃখবোধগুলো নিয়ে কথা বলা হয় না। অনুক্ত থেকে যায় বাসস্থান পরিবর্তন পরবর্তী সেপারেশন অ্যাংজাইটির প্রসঙ্গও।

আমার জীবনের পুরুষদেরকে আমি কীভাবে বোঝাবো সেই অনুভূতির কথা, যা আমাকে সহ্য করতে হয় একসময় বাবা-মায়ের বাড়িতে আমার নিজের মালিকানায় থাকা রুমটির বাইরে দাঁড়িয়ে? যেখানে দাঁড়িয়ে আমি জীবনের ফেলে আসা টুকরো টুকরো অধ্যায়গুলো দেখতে পাই, এবং যেখান থেকে আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কোনগুলো আমি সঙ্গে নেব আর কোনগুলো ফেলে রেখে যাব? এসব হতাশার হাত ধরে যে তীব্র নৈরাশ্য ও ফ্রাস্ট্রেশন আসে, সেগুলোকেই বা আমি কই রাখব?

এগুলো নিয়ে এই সমাজে কেউ আমরা ভাবি না। বরং বিয়ের পর নিজের মনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকা নারীদের আমরা বলি, তারাই তো বাপের বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে আসা প্রথম ব্যক্তি নয়। তাদেরকে আমরা বেয়াদব, অহংকারী আরও কত খেতাব দিই। আমরা বুঝতে পারি না, নিজের পরিবার ছেড়ে অন্য কোনো পরিবারে চলে যাওয়া অনেকটা অভিবাসনের মতো। আর সেই অভিবাসনে হারানোর ব্যথা থাকবেই।

এন এইচ, ২৮ ফেব্রুয়ারি

Back to top button