জাতীয়

কে এই মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান

ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি – মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির অভিবাসন পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন।

বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টারের অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছে, তিনি বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনারকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জাইনুদিন বলেন, আইন মেনেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে এবং তাকে গ্রেপ্তারে তার নিজের দেশ থেকে অনুরোধ ছিল। তবে ঠিক কি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আছে সেই ব্যাপারে কিছু জানাননি তিনি।

সাবেক রাষ্ট্রদূত খায়রুজ্জামানকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা। মেজর পদে কর্মরত অবস্থায় তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান। তিনি জেল হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। তাকে ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর কারাগারে নিহত মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামান হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

জেল হত্যার পর খায়রুজ্জামানকে সেনাবাহিনী থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দিয়ে কায়রোতে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিযুক্ত করা হয়। সেখানে তিনি ১৯৭৬-১৯৮৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তাকে গ্রেপ্তার করে এবং ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে অবসরে পাঠায়। গ্রেপ্তার ও অবসরের আগে তিনি ফিলিপাইনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতা এলে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ২০০৩ সালে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক হিসেবে পুনর্বহাল করা হয়। পরে ২০০৪ সালে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে তিনি জেল হত্যার অভিযোগ থেকে খালাস পান।

খালাস পাওয়ার পর তাকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে তিনি মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হন। এরপর ২০০৭ সালে পূর্ণাঙ্গ সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে প্রথম শ্রেণির রাষ্ট্রদূতের পদমর্যাদা ও মর্যাদাসহ মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফিরে আসতে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু তিনি জীবননাশের আশঙ্কার কথা বলে কুয়ালালামপুরে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থায় (ইউএনএইচসিআর) গিয়ে আবেদন করেন। পরে ইউএনএইচসিআর-এর একটি পরিচয়পত্র পান তিনি এবং উদ্বাস্তু হিসেবে দেশটিতে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছিলেন।

উল্লেখ্য, খায়রুজ্জামান হলেন জিয়াউর রহমানের সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী প্রয়াত মশিউর রহমান যাদু মিয়ার জামাতা। যাদু মিয়ার ছোট মেয়ে রিটা রহমানের স্বামী তিনি।

সূত্র: সমকাল
এম ইউ/১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২

Back to top button