দক্ষিণ এশিয়া

মালালার টুইটে ভারতে বিতর্কের ঝড়

নয়াদিল্লি, ০৯ ফেব্রুয়ারি – দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে গত কয়েক সপ্তাহে কয়েকটি স্কুল ও কলেজে হিজাব পরা মেয়েদের ক্লাসে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে। বিতর্ক এখন ভারতের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। নোবেল বিজয়ী পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মালালা ইউসুফজাইয়ের এক টুইট স্পর্শকাতর এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

আজ বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক টুইটে মালালা লিখেছেন, ‘হিজাব পরার কারণে মেয়েদের স্কুলে ঢুকতে না দেওয়া ভয়ঙ্কর ব্যাপার। বেশি কাপড় বা কম কাপড় – যেকোন অছিলাতেই নারীদের পণ্য বানানোর প্রবণতা চলছেই।’

মালালা তার টুইটে ‘মুসলিম নারীদের কোণঠাসা করা’ বন্ধ করতে ভারতীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

মালালা ইউসুফজাইয়ের এই টুইট প্রকাশের পর থেকেই ভারতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। শীর্ষস্থানীয় সমস্ত ভারতীয় মিডিয়ায় মালালার টুইট নিয়ে রিপোর্ট হয়েছে। সরগরম হয়েছে দেশটির সামাজিক মাধ্যম।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মালার ওই টুইটটি প্রায় ১০ হাজার বার শেয়ার হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য করছেন।

ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা অবশ্য এই টুইটের জন্য মালালার ওপর খড়গহস্ত হয়েছেন।

বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র তার এক টুইটে মালালার তীব্র সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘আফগানিস্তান, ইরান, পাকিস্তানে হিজাব না পরার জন্য মুসলিম নারীদের হত্যা করা হচ্ছে। শুধু হিন্দু বা শিখ হওয়ার কারণে পাকিস্তানে নারীদের হত্যা করা হচ্ছে। এসব নিয়ে তিনি (মালালা) কখনই একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি।’

বিজেপির ওই নেতা মন্তব্য করেন মালালার ‘কট্টর ইসলামী জিহাদি এজেন্ডা’ রয়েছে।

আরেক বিজেপি নেতা মনজিন্দর সিং সিরসা তার এই টুইটে প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তানে ‘হিন্দু মেয়েদের জোর করে ধর্মান্তরিত করা’ নিয়ে কেন কথা বলেন না মালালা।

তিনি আরও বলেন, এটা বিস্ময়কর যে পাকিস্তানে হিন্দু ও শিখ নারীদের জবরদস্তি ধর্মান্তরকরণের মত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মালালা কখনই কথা বলেননি, অথচ আসল তথ্য যাচাই না করেই তিনি আজ টুইট করলেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজার হাজার মানুষ মালালা ইউসুফজাইয়ের টুইট নিয়ে মন্তব্য করছেন। কেউ তার পক্ষ নিচ্ছেন, কেউ সমালোচনা করছেন। অনেকে ব্যক্তিগতভাবেও মালালাকে আক্রমণ করেছেন।

টুইটারে হুমা সাইফ নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘পছন্দের অধিকারের পক্ষে সবার কথা বলা উচিৎ।’ হায়দার নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘কপালে টিপ পরা মেয়েদের নিয়ে কী করা হবে? মাথায় পাগড়ি পরে যেসব শিখ ক্লাসে আসেন তাদের নিয়ে কী বলবেন? … তাদেরও কি স্কুল ও কলেজে ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হবে?’

অন্যদিকে সৌরভ নামে একজন লিখেছেন, ‘মিসেস মালালা, এগুলো স্কুল, ধর্মস্থান নয়।’

শশাঙ্ক শেখর ঝা নামে একজন মালালাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘তাদের গোঁড়া রীতি না মানার জন্য তালেবান তাকে গুলি করেছিল। তিনি এখন ব্রিটেনের বাসিন্দা। নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। এখন তিনি চাইছেন ভারতের মেয়েরা ওই একই গোঁড়া রীতি মেনে চলুক। ভণ্ড।’

সূত্র : ইত্তেফাক
এম এস, ০৯ ফেব্রুয়ারি

Back to top button