সংগীত

আমার সৌভাগ্য যে লতা জির সামনে গাইতে পেরেছিলাম: সাবিনা ইয়াসমিন

ঢাকা, ০৬ ফেব্রুয়ারি – উপমহাদেশের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে শুধু ভারত নয়, শোকের ছায়া নেমেছে দুনিয়াজুড়ে। নক্ষত্রপতনে শোকস্তব্ধ দুনিয়া। বাংলা তো বটেই, বাংলাদেশের সিনেমাতেও গেয়েছেন এই কিংবদন্তি। তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিলো এই দেশের অনেক শিল্পীদের। ছিল অন্তরঙ্গতাও। তেমনই একজন সাবিনা ইয়াসমিন। লতা মঙ্গেশকরকে যিনি গানের স্বরসতী হিসেবেই মানেন।

লতার সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতিচারণ করে হয় সাবিনা ইয়াসমিন গণমাধ্যমে বলেন, ‌‘‘আমার সঙ্গে ১৯৭৮ সালে বোম্বেতে দেখা হয়েছিল। আমরা একটা ফেস্টিভালে বোম্বে গিয়েছিলাম। আমার সৌভাগ্য যে উনার সামনে গাইতে পেরেছিলাম। উনার সঙ্গে ছবি আছে। সেটা বের করে সকাল থেকেই দেখছিলাম। সেই সফরে আমি ববিতা, রাজ্জাক, রোজী সিদ্দিকী ছিলাম। সেখানে ছিলেন শচীন দেববর্মন। তিনি বার বার বলছিলেন, ‘অনেকদিন বাংলা গান শুনি না। কতদিন বাংলা গান শুনি না। তুই একটা গান গা।’ তখন আমি ‘পাল ‍তুলে দে’ গানটি গাইলাম। উনি কাঁদলেন। আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।

তখন দেখি হঠাৎ লতাজি আসছেন। আমি হারমোনিয়াম ছেড়ে অন্যদিকে পালিয়ে গেলাম। কিন্তু আমাকে আবার ডাকা হলো। বলা হলো, গান গাইতেই হবে। ‘জন্ম আমার ধন্য হলো’ গাইলাম। লতাজি এতো প্রশংসা করলেন! আমি বললাম, ছোটবেলায় আপনার গান শুনে বড় হয়েছি। সত্যি বলতে, এখনও প্রতিদিন উনার গান শুনি।’’

লতাকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান সাবিনা ইয়াসমিন বললেন, ‘বলার মতো ভাষা নেই। সকাল থেকেই মুড অফ। কান্নাকাটি করেছি। জানি পৃথিবীর নিয়মে সবই চলবে। তিনি (লতা মঙ্গেশকর) চলে গেলেন। কিন্তু আমার মনে সবসময় একটা চিন্তা ভর করতো, ভাবতাম, তিনি হয়তো কখনও যাবেন না। লতা মঙ্গেশকর ছাড়া একটা পৃথিবীতে- ভাবাই যায় না। আমি ভাগ্যবান, যে লতা জির সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল, কথা হয়েছিল। সেই মুহূর্তগুলো আজও আমার মনে ভর করে। এখন সেদিনের স্মৃতি খুব মনে পড়ছে। এত বড় মাপের শিল্পী কিন্তু কাছে গিয়ে বোঝার উপায় নেই। একটা কথা তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, যত বড় শিল্পী ছিলেন, মানুষ হিসেবে ছিলেন ততই বিনয়ী।’

বিগত ২৭ দিন ধরে করোনা, নিউমোনিয়ার সাথে লড়াই করে আজ (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা ১২ মিনিটে না ফেরার দেশে চলে গেলেন লতা মঙ্গেশকর।

এন এইচ, ০৬ ফেব্রুয়ারি

Back to top button