রাষ্ট্রপতির ভাষণ-কে ‘জুমলাবাজি’ বলে কটাক্ষ তৃণমূল সাংসদের
নয়া দিল্লি, ০৫ ফেব্রুয়ারি – সংসদের প্রত্যকে সদস্যকে সংসদের মর্যাদা বজায় রাখা উচিত। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বৃহস্পতিবারের টুইট প্রসঙ্গে শুক্রবার এমনটাই বলেছিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। কিন্তু, তাতেই বা কী! ফের, বির্তকিত মন্তব্য অপর এক তৃণমূল সাংসদের। তিনি অপরূপা পোদ্দার। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বক্তৃতাকে ‘জুমলা বাজি’ বলে কটাক্ষ করলেন তিনি। যা নিয়ে তৎক্ষণাৎ শুরু হয় বিতর্ক। ‘জুমলা বাজি’ শব্দটিকে অপশব্দ বলে অ্যাখ্যা দেওয়া হয়। কেন, সাংসদ অধিবেশন চলাকালীন তাঁর বক্তব্যে এই ধরনের ‘অপশব্দ’ ব্যবহার করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঘটনায় কেন্দ্রের তরফে কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেই খবর সূত্রের।
অধিবেশন চলাকালীন সাংসদ অপরূপা তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ‘দেশের সরকার সাধারণ মানুষের কাছে একটি নমনীয় গোলাপি আবহাওয়ার ভ্রান্ত ধারণা তৈরির চেষ্টা করছে। বস্তুত, যেখানে এই দেশের প্রতিটি ক্ষেত্র সমস্যায় বিপদে ও চিন্তায় রয়েছে। রাষ্ট্রপতির ভাষণেই তা স্পষ্ট। তাঁর ভাষণ শুনলেই মনে হবে জুমলাবাজির বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন তিনি। সর্বাধিক যে বিষয়গুলি এখন দেশের পক্ষে চিন্তার তার কোনও উল্লেখ নেই। করোনা মোকাবিলা, কর্মসংস্থানের অভাব, পরিযায়ী শ্রমিকের সমস্যা, জিডিপির মান নিম্নমুখী হওয়া, দেশের সর্বত্র অসমতার যে ছবি, তা কোনওভাবেই আলোচিত হয়নি।’
বস্তুত, তৃণমূল সাংসদের এ হেন মন্তব্যে কার্যত শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এর আগে, রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। রাজ্যপাল প্রসঙ্গের কোনও মন্তব্য করা যাবে না এমন নির্দেশের পরেই অধিবেশন চলাকালীন ‘ওয়াক আউট’ করেন তৃণমূল সাংসদরা।
বস্তুত, লোকসভার অধিবেশনে প্রথম থেকেই চড়া সুর তৃণমূলের। ওম বিড়লা শুক্রবার কারও নাম না নিলেও, তাঁর নিশানায় যে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ছিলেন, তা স্পষ্টই বোঝা গিয়েছে। মহুয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে চেয়ারের সমালোচনা করেছেন। তাঁকে সময় না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। সেই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদের নাম না করে ওম বিড়লা লোকসভায় সাংসদদের উদ্দেশে বলেন, “আমি আপনাদের জানাতে চাই, বাড়ির ভিতরে হোক বা বাড়ির বাইরে, চেয়ারের বিরুদ্ধে মন্তব্যগুলি দেশের মর্যাদার জন্য ভাল নয়। সংসদের যথেষ্ট মর্যাদা রয়েছে এবং প্রত্যেক সদস্য এটিকে সম্মান করে। চেয়ার সর্বদা নিরপেক্ষ হওয়ার চেষ্টা করে এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করে, নিয়ম অনুযায়ী অধিবেশন চালায় এবং স্পিকারের চেয়ারে বসে থাকা সম্মানিত সদস্য চেয়ারের জন্য উপলব্ধ সমস্ত সাংবিধানিক অধিকার পান। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি যে কেউ চেয়ার সম্পর্কে সংসদের ভিতরে বা বাইরে কোনও মন্তব্য করবেন না।”
উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়েছেন সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। খোদ তৃণমূল সুপ্রিমোও তাঁকে ভরা বৈঠকে ‘ধমক’ দিয়েছেন। দলের বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন অপরূপা, যার জেরে বিতর্ক শুরু হয়। খোদ তৃণমূল নেত্রী কড়া ভাষায় ধমক দেন অপরূপাকে। ফের আরও একবার ‘অপশব্দ’ ব্যবহার করে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল সাংসদ এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
সূত্র : জাগো নিউজ
এম এস, ০৫ ফেব্রুয়ারি