ব্যক্তিত্ব

‘মুড ডিসর্ডার’ কাটিয়ে উঠবেন যেভাবে

মুড ডিসর্ডার এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা। আমাদের সবারই কোন না কোন সময় মন খারাপ হয়, মেজাজ ঠিক থাকে না, কোন কিছু ভাল লাগে না। একজন মানুষ সবসয় ভাল থাকতে পারেন না। তার কখনো না কখনো খারাপ লাগে। কষ্ট বোধ হয়। স্বাভাবিক। কিন্তু যখন যে কোন সময় কারণ ছাড়াই মুড বদলে যাওয়া, বিষন্ন বোধ করা, আচরণে পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক নয়। মুড বদলানোর এই সিরিয়াস প্রকৃতিই মুড ডিসর্ডার।

মুড ডিসর্ডার বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন- মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসর্ডার, বিপোলার ডিসর্ডার (ম্যানিয়া- ইউফোরিক, হাইপার এক্টিভ, অতিরিক্ত অহম, অবাস্তব ইতিবাচকতা), সাইক্লোথিমিয়া (বিপোলার ডিসর্ডারের অনুগ্র ফর্ম) এবং SAD (seasonal affective disorder)।

কিভাবে বুঝবেন আপনার মুড ডিসর্ডার আছে কিনা?
মুড ডিসর্ডার একটি সিরিয়াস মানসিক সমস্যা। এই লক্ষণগুলো অতিমাত্রায় দেখা দিলে এবং অনিয়ন্ত্রণযোগ্য হলে বুঝবেন আপনার এই সমস্যা রয়েছে-

১। অতিমাত্রায় বিষন্ন বোধ করা
২। ক্ষুদ্র কারণে দীর্ঘসময় মন খারাপ থাকা
৩। অপরাধবোধ
৪। দৈনন্দিন জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
৫। ঘন ঘন মুড পরিবর্তন হওয়া
৬। অবসাদগ্রস্থতা
৭। হতাশ, দুঃখী, একা বোধ করা
৮। প্রিয়জনদের সাথে আলাপচারিতা বা যোগাযোগে সমস্যা হতে থাকা
৯। ঘুমের সমস্যা
১০। অমনোযোগ
১১। ওজন কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া

কিভাবে ভাল থাকবেন?
মুড ডিসর্ডার হেলাফেলা না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। হতাশা, বিষণ্ণতা, অবসাদগ্রস্থতা- এই সবই নেতিবাচক অনুভূতি। আমাদের মস্তিষ্কে ভীষণ চাপ তৈরি করে এগুলো। শুধু মানসিক দুরাবস্থা শারীরিক অনেক মারাত্মক সমস্যার জন্ম দিতে পারে। তাই-

ডাক্তারের পরামর্শ নিন
নিজে নিজে এমন সমস্যার সমাধান করতে যাওয়া ঝুকিপূর্ণ। কারণ স্বাভাবিক অনুভূতিগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার কারণে আপনি চাইলেও এগুলো থেকে নিজে নিজে মুক্ত হতে পারবেন না। তাই একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।

প্রেস্ক্রিপশন মেনে চলুন
অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শমত ঔষধ গ্রহণ করবেন। নিয়ম মত ঔষধ সেবন খুবই জরুরি। মুড ডিসর্ডার আছে এমন রোগীরা সাধারণত ঔষধ সেবনে অনিয়ম করে থাকে। কারণ, ঔষধ খেতে হচ্ছে এই বিষয়টিও তাকে হতাশ করে। প্রয়োজনে পরিবারের আর কাউকে দায়িত্ব দিন আপনার খেয়াল রাখার।

নিয়মানুবর্তী হন
সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠুন। আবার একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান। নিজের কাজগুলো ঠিক মত করুন। গবেষণায় দেখা গেছে অগোছালো মানুষদের তুলনায় গোছানো মানুষেরা কম হতাশ বোধ করেন। আপনি যখন নিজের কাজগুলো ঠিক মত করতে থাকবেন তখন আপনার নিজেকে ভাল লাগতে শুরু করবে। আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

নিজেকে প্রশংসা করুন
আপনি যে নিজের মানসিক অবস্থা বুঝতে পেরেছেন এজন্য নিজেকে সাধুবাদ দিন। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা মনোরোগের চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে পিছিয়ে যান, নিজের সমস্যা স্বীকার করেন না, করলে হীনমন্যবোধ করেন। সেখানে আপনি একটি সুস্থ্য জীবনে ফিরে যাওয়ার আপ্রান চেষ্টা করছেন। নিজেকে ধন্যবাদ দিন এজন্য।

এম ইউ

Back to top button