ঢাকা

প্রকাশ্যে নৌকায় ভোট মেরে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ

ঢাকা, ০১ ফেব্রুয়ারি – ষষ্ঠ ধাপে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ১৪টি এবং দোহার উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ ম্যানেজ করে নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদেরকে মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া উঠেছে। এ ছাড়া কেন্দ্রও দখল করে নেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার (৩১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে দেখা গেছে ভোটারদের। প্রতিটি কেন্দ্রেই পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

অধিকাংশ কেন্দ্রে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এজেন্ট না থাকায় কোনো ধরনের অঘটন ছাড়াই শেষ হয়েছে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। প্রতিটি ইউনিয়নেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। শুরুর দিকে বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন হয়ে ওঠে শুধু মেম্বার প্রার্থী কেন্দ্রিক।

প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার পর বুথে গিয়ে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত আসনে ভোট দিতে দেখা গেছে। অনেক ভোটার তাদের পছন্দের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ভোট দিতে না পেরে শুধু মেম্বারদেরই ভোট দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

নবাবগঞ্জের চুড়াইন ইউনিয়নের মুসলিম হাটি তালিমুল কোরান মাদরাসা কেন্দ্রে এক ভোটারের কাছে ভোট না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, নৌকা তো এমনিই নির্বাচিত হবে, ভোট দিয়ে কী হবে? তাই ভোট দিইনি।

নবাবগঞ্জের আগলা, কৈলাইল, নয়ন শ্রী চুড়াইন, শোল্লা, দোহারের বিলাশপুরসহ প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে শুধু নৌকার এজেন্টদেরই দেখা গেছে।

শোল্লা ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সালাম মাস্টার জানিয়েছেন, সকালেই আমাদের সব এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাই বেলা ১১টার আগেই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন বর্জন করেছি। এই চিত্র শুধু শোল্লার নয় প্রতিটি ইউনিয়নে একই চিত্র। কোনো কেন্দ্রেই নৌকার এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনো এজেন্ট ছিল না।

আগলা ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বতন্ত্র প্রার্থী জানান, নিজেই এলাকায় থাকতে পারি না, কেন্দ্রে যাব কীভাবে। সুষ্ঠু ভোট হলে আমিই জয়ী হতাম।

বিলাশপুর উপজেলার, স্বতন্ত্র প্রার্থী আলাউদ্দিন মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশকে নৌকার প্রার্থী ম্যানেজ করে মনমতো কেন্দ্র দখল করে নিচ্ছে। আমাকে পর্যন্ত ভোট দিতে দেয়নি। আমার গায়ে হাত তুলে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমার তিন ছেলেকে মারধর করেছে পুলিশে দিয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।

নয়ন শ্রী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, ইভিএমের ভোট শুধু নাটক, নৌকার প্রার্থীদের ভয়ে এলাকায় কোনো লোক থাকতে পারছে না। ভোট কেন্দ্র থেকে আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা না থাকলেই পুলিশকে ম্যানেজ করে তারা নিজেরাই ভোট দিয়ে নিচ্ছে নামমাত্র ইভিএমে।

প্রকাশ্যে নৌকায় ভোট দেওয়া ও নৌকা ছাড়া অন্য প্রার্থীর এজেন্ট না থাকার কারণ জানতে চাইলে মুসলিম হাটি তালিমুল কোরান মাদরাসার প্রিসাইডিং অফিসার মো. রিজোয়ান বলেন, আমিতো বাড়ি থেকে এজেন্ট এনে দেব না, যে এজেন্ট তাদের কাগজপত্র দিয়ে আবেদন করেছেন সবার আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। আর প্রকাশ্যে কোনো ভোটের ঘটনা এখানে ঘটেনি।

সূত্র : আরটিভি
এন এইচ, ০১ ফেব্রুয়ারি

Back to top button