কক্সবাজার

রায় শুনে অস্থির হয়ে পড়েন প্রদীপ, নির্বিকার লিয়াকত

কক্সবাজার, ৩১ জানুয়ারি – সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে অস্থির হয়ে পড়েন টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ। কাঠগড়ায় তাকে ছটফট করতে দেখা যায়। তবে পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলী ছিলেন অনেকটা নির্বিকার।

অন্যদিকে যাবজ্জীবন রায়ের দণ্ড শুনে কাঠগড়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন আসামি মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন। এরপরে তারা অপর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নন্দ দুলাল রক্ষিতকে চড়-থাপড় মারতে থাকেন। সে সময় আইয়াজ বলতে থাকেন, আমাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় নন্দ দুলাল। সে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সোমবার বিকালে এই আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করেন।

বিচারক এ মামলায় আরও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। তারা হলেন, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত (৩০), কনস্টেবল সাগর দেব, ওসি প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা (৩০), স্থানীয় বাসিন্দা বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন (২২), মো. নিজাম উদ্দিন (৪৫) ও মোহাম্মদ আইয়াজ (৪৫)।

এ ছাড়া খালাস পেয়েছেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. লিটন মিয়া (৩০), কনস্টেবল ছাফানুর করিম (২৫), মো. কামাল হোসাইন আজাদ (২৭), মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান আলী (৪৭), কনস্টেবল মো. রাজীব হোসেন (২৩) ও আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (২০)।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণবিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য প্রায় এক মাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় অবস্থান করছিলেন তিনি। ওই কাজে তার সঙ্গে ছিলেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ।

সিনহা নিহত হওয়ার পর পুলিশ দাবি করেছিল, ‘সিনহা তল্লাশিতে বাধা দেন। এ সময় তিনি পিস্তল বের করলে চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।’ এসব বিষয় উল্লেখ করে এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয় সিনহার সঙ্গী সিফাতকে। ওই মামলায় সিফাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর সিনহা যেখানে অবস্থান করছিলেন, সেই নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তার ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকেও পুলিশ আটক করে। নুরকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এন এইচ, ৩১ জানুয়ারি

Back to top button