অভিষেকেই মৃত্যুঞ্জয়ের হ্যাটট্রিকে চট্টগ্রামের জয়
চট্টগ্রাম, ৩০ জানুয়ারি – বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ১২তম ম্যাচে শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে মাঠে নামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এই ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০২ রান করেছে চট্টগ্রাম। জবাবে এই রান তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান করে সিলেট সানরাইজার্স। ফলে ১৬ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিলেট।
২০৩ রানের পাহারসম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি সিলেট, দলীয় ৯ রানেই সাজঘরে ফিরে যায় গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লেন্ডল সিমন্স। আউট হওয়ার আগে এই ব্যাটার করেন ৭ বলে ৯ রান। শুরুতে উইকেট হারালেও পড়ে অবশ্য জ্বলে উঠে সিলেট সানরাইজার্সের ব্যাটাররা। তবে সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি সিলেট। দলীয় ১২১ রানে কলিন ইনগ্রামকে সরাসরি বোল্ড করে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। আউট হওয়ার আগে ক্যারিবিয়ান এই ব্যাটার করেন ৩৭ বলে ৫০ রান। এরপর আর সিলেটের কোন ব্যাটারই উইকেটে থিতু হতে পারেনি।
তবে সবার আশা যাওয়ার মিছিলে দলের জন্য লড়াই করে গেছেন এনামুল হক বিজয়। ৪৭ বলে ৭৮ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যায় বিজয়। ১৮তম ওভারে এনামুল হক বিজয়, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও রবি বোপারাকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক করেন বিপিএলে অভিষেক হওয়া মৃত্যুঞ্জয়। প্রথম দুই বলে ছয় ও চার হাঁকিয়েছিলেন বিজয়। তৃতীয় বলে এক্সট্রা কাভারে নাসুমের হাতে ধরা পড়েন বিজয়। পরের বলে মোসাদ্দেক ক্যাচ দেন আফিফের হাতে আর রবি বোপারা আউট হন এলবিডব্লিউ হয়ে।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েই ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেন চট্টগ্রামের বিদেশী ওপেনার ইংল্যান্ডের উইল জ্যাকস। প্রথম ওভারে ৬ রান তুললেও, পরের তিন ওভারে যথাক্রমে ১২, ১৫ ও ১৯ রান তুলেন জ্যাকস ও আরেক ওপেনার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেনার লুইস। এতে চতুর্থ ওভারেই দলীয় ৫০ রানে পৌঁছে যায় চট্টগ্রাম। লুইস ছিলেন একেবারেই সতর্ক মুডে। তাই জ্যাকস যখন ১৫ বলে ৪২ রানে দাঁড়িয়ে, তখন লুইসের রান ৯ বলে ৪ রান।
পঞ্চম ওভারের প্রথম তিন বলে ১০ রান তুলে মাত্র ১৮ বলে হাফ সেঞ্চুরিতে পা রাখেন জ্যাকস। হাফ সেঞ্চুরি পূর্ন করার পরের ডেলিভারিতে সিলেটের পেসার তাসকিন আহমেদের বলে শর্ট ফাইন লেগে লেন্ডন সিমন্সকে ক্যাচ দেন জ্যাকস।
৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় মাত্র ১৯ বলে ৫২ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন জ্যাকস। জ্যাক ফেরার ৪ বল পর থামেন লুইসও। সিলেটের স্পিনার সোহাগ গাজীর বলে আউট হওয়া লুইস করেন ৮ রান।
২৮ বলে ৬২ রানের উদ্বোধনী জুটির পর দ্রুতই প্যাভিলিয়নে ফিরেন চট্টগ্রামের দুই ওপেনার। ৫ বল ও ৪ রানে ব্যবধানে ফিরেন জ্যাকস ও লুইস। এরপর দলের স্কোরের ভিত গড়েন আফিফ হোসেন ও সাব্বির রহমান। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রানের চাকা ঘুরিয়েছেন তারা। এতে বড় স্কোর গড়ার পথ পায় চট্টগ্রাম।
উইকেটে জমে যাওয়া আফিফ ও সাব্বিরের জুটি ভেঙ্গে ১৩তম ওভারে সিলেটকে দারুন এক ব্রেক-থ্রু এনে দেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক। ২৯ বলে ৩১ রান করেন সাব্বির। আর তৃতীয় উইকেটে ৪৫ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন তারা।
১৩তম ওভারে সাব্বির আউট হওয়ার পর মারমুখী হয়ে উঠেন আফিফ। মুক্তার আলি আর রবি বোপারার ৪ বল খেলে ১৭ রান তুলেন তিনি। বোপারাকে ছক্কার মারার পরের ডেলিভারিতে ইয়র্কারে বোল্ড হন আফিফ। তার আগে ২৮ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৮ রান করেন আফিফ। এরপর চট্টগ্রামের নতুন অধিনায়ক নাঈম ইসলাম ৮ রানে থামলেও, ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল ও চট্টগ্রামের হয়ে প্রথম ৪ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা মেহেদি হাসান মিরাজ।
হাওয়েল-মিরাজ ঝড়ে শেষ ২৮ বলে ৬৫ রান তুলে চট্টগ্রাম। এতে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০২ রান পায় চট্টগ্রাম। এবারের বিপিএলে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান। ২১ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৪১ রান করেন হাওয়েল। ৪ বলে ২টি ছক্কায় অপরাজিত ১৩ রান করেন মিরাজ। পেসার তাসকিনের করা শেষ ওভার থেকে ২২ রান নেন হাওয়েল ও মিরাজ।
সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এন এইচ, ৩০ জানুয়ারি