ব্যক্তিত্ব

অ্যনোসোগনোসিয়া- অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসকে না বলুন

কালকে আপনার চাকরির ইন্টারভিউ। অথচ একদম পড়াশোনা করেন নি আপনি। এমনকি প্রস্তুতি ভালো না হওয়া সত্ত্বেও ঠিক জানেন আপনি- চাকরিটা আর কাউকে নয়, বরং আপনাকেই দেবে ওরা। ভালোবাসার মানুষটি প্রায় প্রতিদিনই আপনাকে বলে চলেছে একটু যত্ন নিতে। সম্পর্কটির দিকে খেয়াল রাখতে। ভালোবাসায় আগলে রাখতে। কিন্তু আপনার মুখে কেবল একটিই কথা- যাওয়ার পথ খোলা আছে। চলে যেতে পারো। কারণ আপনি জানেন যে, যতটাই খারাপ ব্যবহার বা উদাসীনতা দেখাননা কেন আপনি তাকে সে আপনাকে ছেড়ে আর কোথাও যাবেনা। কারণ?

কারণ আপনার মতন আর কাউকে ওরা খুঁজে পাবে কোথায়? হয়তো আপনার কাছে এটাকে সত্যি বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু আপনি কি এটা জানেন যে আত্মবিশ্বাস একটা পর্যায় পর্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার হলেও যে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসটি আপনি আপনার ভেতরে পুষে রাখছেন খুব যত্নে সেটা কেবল অস্বাভাবিক যে তাই নয়। বরং এক রকমের অসুখ বলতে পারেন আপনি একে। যার নাম অ্যানোসোগনোসিয়া।

কিন্তু কী করে নিজের ভেতর থেকে তাড়াবেন এই ভয়ানক ব্যাপারটিকে? আর একে চিহ্নিত করবেনই বা কীভাবে? সাধারণত তিনটি উপায়ে রোজ আপনার ভেতরে অ্যানোসোগনোসিয়া নমক ভয়ানক অসুখটি বাসা বেঁধেছে কিনা সেটা পরীক্ষা করে নিতে পারবেন আপনি। উপায়গুলো হল-

১. প্রতিনিয়ত নিজেকে যাচাই করুন
আপনার হয়তো মনে হতেই পারে যে, আপনি সবকিছু জানেন। বা আপনার কাছে যে বিষয়টি ভালো বলে মনে হচ্ছে সেটাই ঠিক। সত্যিই কি এমনটা মনে হচ্ছে আপনার? পরীক্ষা করতে খুব ভালো ও জীবন নিয়ে দক্ষ কারো সাথে আলাপ করুন আর আপনার চিন্তা-ভাবনা আর সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তার মতামত জানতে চান। সে কোন নেতিবাচক কিছু বললে সেটা আপনি মেনে নিতে পারছেন কিনা সেটা দেখুন। এভাবে অ্যানোসোগনোসিয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।

২. অজানাগুলোর তালিকা করুন
যখনই আপনার মনে হবে আপনি অনেক কিছুই জানেন, সাথেসাথে আপনি কী কী জানেন না সেগুলো মনে করার চেষ্টা করুন। মনে মনে সেগুলোর তালিকা তৈরি করে ফেলুন। বিষয়টি সবসময় বেশি কাজ দেয় গবেষণার ক্ষেত্রে। সবসময় প্রথমে কোন একটা কাজ করে এরপর সেটাকে সবার কাছে বলুন।

৩. ফাঁকা সময় হাতে রাখুন
এমন ঠিক কতবার হয়েছে আপনার সাথে যে, কোন কাজ করতে মাত্র আধঘন্টা সময় নেবে এমনটা ভেবে কাজে হাত দেওয়ার পর সেটা শেষ হতে পুরো একটা দিন লেগে গেল? নিজের প্রতি এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের ঝক্কি থেকে দূরে থাকতে কিছু বাড়তি ফাঁকা সময় হাতে রাখুন আর সেগুলোকে দরকার মতন কাজে লাগান।

মূলত, অ্যানোসোগনোসিয়া থেকে দূরে থাকার সবচাইতে প্রথম ধাপটি হচ্ছে আপনি যে সবকিছু জানেন না বা পারেন না সেটা স্বীকার করে নেওয়া। তাই এই কথাটি সবসময় মাথায় রাখুন। তবে মনে রাখবেন যে, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস যেমন আপনার জন্যে ক্ষতিকর, তেমনি খুব অল্প আত্মবিশ্বাসও আপনার পক্ষে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই দুটোকে মাঝামাঝি পর্যায়ে নিয়ে আসুন আর সুস্থ থাকুন মানসিকভাবে।

এম ইউ

Back to top button