ব্যবসা

সিআইপি কার্ড পেলেন ১৭৬ জন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী

ঢাকা, ২০ জানুয়ারি – বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) কার্ড পেয়েছেন দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ-এর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরীসহ ১৭৬ জন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী।

বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নির্বাচিত শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের সিআইপি কার্ড প্রদান করেন।

প্রাণ-আরএফএল-এর চেয়ারম্যানের পক্ষে সিআইপি কার্ড গ্রহণ করেন প্রাণ এক্সপোর্টের জেনারেল ম্যানেজার গোলাম রসুল।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ যে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে সেখানে ব্যবসায়ীদের অবদান অনস্বীকার্য।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা প্রত্যেকেই অনেক সাহসী মানুষ। অনেক চড়াই-উতরাই পার করে আজকের অবস্থানে এসেছেন।

২০২৪ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি টার্গেট ৮০ মিলিয়ন ডলার উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, এটা বড় ধরনের টার্গেট। তবে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা পেলে আমরা সেটা অর্জন করতে পারবো।

তিনি বলেন, পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ (প্রোডাক্ট ডাইভারসিফিকেশন) ও পোশাকখাতের অগ্রগতিতে আমার কাছে মনে হচ্ছে দেশের অর্থনীতির চাকা সম্প্রসারণে আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সামনে গার্মেন্টসে রিলোকেশনের কারণে আমাদের সুযোগ বাড়বে। ভিয়েতনামের বাজার ধরার একটা সুযোগ আছে আমাদের সামনে।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের উন্নতির মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এটাও চিন্তা করেন। তিনি দূতাবাসগুলোকে বলে দিয়েছেন। আপনাদের কাজ হলো বাংলাদেশের পণ্য প্রদর্শন করা। সেখান থেকে আমাদের সমর্থন আছে। আর আমরাও চেষ্টা করবো আপনাদের সব সমস্যা সমাধান করতে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ প্রমুখ।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশে পণ্য উৎপাদন, বিপণন, বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ ও বেসরকারি পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখায় বিভিন্ন খাতের ১৭৬ ব্যবসায়ীকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে রপ্তানির জন্য ১৩৮ ব্যবসায়ীকে (২০১৮ সাল) এবং পদাধিকার বলে ৩৮ ব্যবসায়ী নেতাকে সিআইপি কার্ড দেওয়া হয়েছে।

২০১৮ সালে সিআইপির (রপ্তানি) জন্য পণ্য ও সেবা সংশ্লিষ্ট ২২টি খাতের মধ্যে ২০টি খাতে মোট ২৫০টি আবেদন পাওয়া যায়। মেলামাইন ও আসবাবপত্র খাতে কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি। এছাড়া জাহাজনির্মাণ শিল্প ও চামড়া (ক্রাশ ও ফিনিশড) থেকে আবেদন পাওয়া গেলেও শর্তাদি পূরণে সক্ষম না হওয়ায় এ খাতে সিআইপি (রপ্তানি) নির্বাচিত করা সম্ভব হয়নি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৮ সালের সিআইপি নির্বাচন সংক্রান্ত সব আনুষ্ঠানিক কার্যাদি সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও করোনা পরিস্থিতির কারণে (২০২০ ও ২০২১ সালে) এই কার্ড প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

দেশের সফল রপ্তানিকারক, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও পারস্পরিক সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করার পাশাপাশি তাদের রপ্তানি বাণিজ্যে উৎসাহিত করতে প্রতিবছর সিআইপি কার্ড দেয় ইপিবি।

২০১৮ সালে কাঁচা পাট রপ্তানির জন্য একজন, পাটজাত পণ্যে তিনজন, চামড়াজাত পণ্যে পাঁচজন, হিমায়িত খাদ্যে সাতজন, তৈরি পোশাকখাতে ২৩ জন, কৃষিজাত দ্রব্যে ছয়জন, অ্যাগ্রো প্রসেসিংয়ে চারজন, হালকা প্রকৌশল পণ্যে দুইজন, ফার্মাসিউটিক্যালসে দুইজন, হস্তশিল্পজাত পণ্যে পাঁচজন, হোম টেক্সটাইল পণ্যে তিনজন, তৈরি পোশাকে (নিট) ৪৩ জন, সিরামিক পণ্যে দুইজন, প্লাস্টিক পণ্যে দুইজন, টেক্সটাইল পণ্যে পাঁচজন, কম্পিউটার-সফটওয়্যারে দুইজন, বিবিধ ২৩ জন, ইপিজেডভুক্ত ‘সি’ ক্যাটাগরির পণ্যে দুইজন ও ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে ৩৮ জনকে সিআইপি কার্ড দেওয়া হয়েছে।

রপ্তানি খাতে অবদানের জন্য এক বছর মেয়াদে সিআইপি নির্বাচন করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে নির্বাচিত সিআইপিরা পরবর্তী বছরের সিআইপি (রপ্তানি) ঘোষণার আগে পর্যন্ত এই মর্যাদায় ভূষিত থাকবেন।

সিআইপি (রপ্তানি) হিসেবে নির্বাচিত ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশ পাস ও গাড়ির স্টিকার প্রাপ্তি, জাতীয় অনুষ্ঠান ও পৌরসভায় নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। এছাড়া ব্যবসা সংক্রান্ত সফরে বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার, ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন প্রাপ্তি, নির্বাচিত সিআইপি তার স্ত্রী-পুত্র-কন্যা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন সুবিধায় অগ্রাধিকার এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা পেয়ে থাকেন।

সূত্র : জাগো নিউজ
এন এইচ, ২০ জানুয়ারি

Back to top button