ব্যক্তিত্ব

ইমোশনাল এবিউজের শিকার হচ্ছেন না তো?

ইমোশলনাল এবিউজ এর বিভিন্ন সংজ্ঞা রয়েছে। তবে একে বুঝতে হবে আমাদের বুঝতে হবে একজন মানুষের ব্যবহারের প্যাটার্ন এবং তার সম্পর্ক চর্চার ধরণ। একটি যুগলের উভয়ের মধ্যে যখন ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয় তখন একজন অপরজন দ্বারা মানসিক পীড়নের শিকার হতে থাকেন। এটা শারীরিকও পীড়নও হতে পারে। মানুষের আবেগকে দূর্বলতা ধরে নিয়ে যখন তার উপর শারীরিক বা মানসিকভাবে নিয়ন্ত্রণ আতোপ করা হয় তখন তাকে মনোবিজ্ঞানীরা ইমোশনাল এবিউজ বলছেন।

নিয়ন্ত্রণকারী সবসময় এটি সচেতনভাবে করেন তা নয়। অনেক সময় পরিবেশটাই এমন হয় যে যিনি এবিউজ করছেন এবং যিনি এবিউজ হচ্ছেন তারা কেউই বুঝতে পারেন না তারা এই কাজটি করছেন বা এর দ্বারা কষ্ট পাচ্ছেন। খুব দূরে যেতে হবে না উদাহরণের জন্য। আমাদের উপমাহাদেশের বেশীরভাগ পরিবারে নারীরা এই এবিউজের শিকার হন। যৌন জীবন থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তে নিয়ন্ত্রিত হন। তারও আগে প্রেমিকের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হন। স্বল্প সংখ্যক নারী নিজেকে এর থেকে মুক্ত করতে পারেন।

কীভাবে চিহ্নিত করবেন?
বিভিন্নভাবে হতে পারে এর প্রকাশ। অনেক লক্ষণ রয়েছে। যেমন- আপনার সিদ্ধান্তকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া, টিপ্পনি কাটা, অতিরিক্ত যত্ন, সমালোচনা, কোন কাজ করতে না দেওয়া অথবা ইচ্ছামত করানো, সবসময় ভুল শুধরে দেওয়া, লজ্জা দেওয়া, দোষারোপ করা এই সব কিছুই ইমোশনাল এবিউজের লক্ষণ।

একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্কে পারস্পারিক আলোচনার জায়গা থাকে। একজন আরেকজনের মতের গুরুত্ব দেয়। সব সিদ্ধান্ত হয় উভয়ের। যখনই একজন আপনাকে শুধু তার আজ্ঞাকারী দাস মনে করছেন তখনই বুঝবেন আপনি এবিউজ হচ্ছেন। আপনি হয়ত ভাবছেন, আপনার যদি কোন সমস্যা থাকে না, এভাবেই থাকতে ভাল লাগে তাহলে কিভাবে এটি এবিউজ!

আপনি নিয়ন্ত্রিত সম্পর্কে কোন সমস্যা না দেখলেও এটি এবিউজ। কারণ এটি একজন মানুষের সাবলীলতাকে ধ্বংস করে। সারাজীব তাকে মাথা নোট করে রাখে। মন খুলে আনন্দ করা কি বস্তু তা এই নিয়ন্ত্রিত মানুষেরা জানে অ্যা। মুক্তির স্বাদ অজানা থেকে যায়, অথবা জানলেও তারা মেনে নেয়, মানিয়ে নেয়।

কিভাবে বের হয়ে আসবেন?
সবসময়য় মনে রাখবেন, জীবন একটি জাহাজ আর সেই জাহাজের ক্যাপ্টেন আপনি। কখনো মনে করবেন না, আপনি কমই জানেন! মনে করবেন না, আপনি কম বোঝেন। প্রত্যেকটি মানুষের মস্তিষ্ক একইভাবে তৈরি। পার্থক্য শুধু চর্চায়। তবে হ্যাঁ, যেটা আপনার ভাল লাগে না সেখানে মস্তিষ্ক খাটিয়ে নিজেকে কষ্ট দেবেন না। করুন সেটাই যেটা আপনি চান।

সবসময় নিয়ন্ত্রিত হতে থাকলে সেটা অভ্যাস হয়ে যেতে পারে। তাই নিজেকে স্বাধীন করার পর কি করবেন সেটাও ভাবুন। নিজের লক্ষ্য তৈরি করুন। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।

লিখেছেন- আফসানা সুমী

এম ইউ

Back to top button