লালমনিরহাট

বুড়িমারীর ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূল শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয় আলেমরা

লালমনিরহাট, ৩১ অক্টোবর- ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর তার মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা নিন্দা কুড়িয়েছে দেশজুড়ে। ঘটনার প্রতিবাদ, জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আয়োজিত হচ্ছে সমাবেশ-মানববন্ধন।

এরমধ্যে শহিদুন্নবী জুয়েল নামের ওই ব্যক্তিকে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূল শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয় আলেমরা।

শনিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের শহীদ আফজাল হল কক্ষে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে আলেমরা এ দাবি জানান।

পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ২৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকেলে নির্মম পিটুনির শিকার হন জুয়েল। পরে পিটিয়ে হত্যার পর তার মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

বৈঠকে পাটগ্রাম উপজেলার ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ পাঁচ শতাধিক আলেম অংশ নেন।

বৈঠকে আলেমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অপরদিকে যেকোনো বিষয়ে গুজব না ছড়িয়ে তদন্ত সংস্থা ও প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য আলেম সমাজের প্রতি আহ্বান জানানো হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

নিহত যুবক শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রীপাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।

ঘটনার বর্ণনায় পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শহিদুন্নবী জুয়েল বৃহস্পতিবার বিকেলে সুলতান যোবাইয়ের আব্দার নামে একজন সঙ্গীসহ বুড়িমারী বেড়াতে আসেন। বিকেলে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন তারা। নামাজ শেষে পাঠ করার জন্য তাক থেকে কোরআন শরীফ নামাতে গিয়ে অসাবধনাতাবশত কয়েকটি কোরআন ও হাদিস শরীফ তার পায়ের ওপর পড়ে যায়। এ সময় তুলে চুম্বনও করেন জুয়েল। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে মুয়াজ্জিনের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আশপাশের লোকজন ছুটে এসে সন্দেহবশত জুয়েল ও সুলতান যোবাইয়েরকে পাশে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ওসি বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হন।

সন্ধ্যায় পুরো বাজারে এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, কোরআন অবমাননার দায়ে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। এ সময় উত্তেজিত হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দরজা জানালা ভেঙে প্রশাসনের কাছ থেকে জুয়েলকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ টেনে পাটগ্রাম বুড়িমারী মহাসড়কে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে।

সূত্র : বাংলানিউজ
এন এইচ, ৩১ অক্টোবর

Back to top button