ক্রিকেট

একসাথে ৩ ফরম্যাটে খেলা অসম্ভব : সাকিব

ঢাকা, ২৪ ডিসেম্বর – জাতীয় দলের তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেছেন, সামনে এক সঙ্গে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া তার জন্য ‘প্রায় অসম্ভব’ হবে।

করোনা কালে জৈব-সুরক্ষা বলয়ে থেকে ক্রিকেট এবং পরিবার বিদেশে থাকায় বেছে বেছে আন্তর্জাতিক সিরিজ বা টুর্নামেন্টগুলো খেলবেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। এমনকি টেস্ট ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া নিয়ে কঠোরভাবে চিন্তা করছেন তিনি।

পারিবারিক কারণ দেখিয়ে নিউজিল্যান্ড সফরে যাননি সাকিব। বুধবার রাতে তিনি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছেন। যাওয়ার আগে একাধিক সংবাদমাধ্যমকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি।

একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে সাকিব বলেছেন, তিন ফরম্যাটের ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া এখন তার পক্ষে কঠিন। শুধু টেস্টই নয়, ওয়ানডে সুপার লিগের বাইরের ওয়ানডে ম্যাচও না খেলার ভাবনা তার।

সাকিব বলেন, ‘আমার কাছে কোনটা গুরুত্বপূর্ণ আমি জানি, কোনটা গুরুত্ব দিতে হবে সেটাও আমি জানি। আর এখন এমন একটা সময় এসেছে যে, আসলেই আমি টেস্ট নিয়ে চিন্তা করছি। এটাই হচ্ছে ফ্যাক্ট; যে আমি আদৌ টেস্ট খেলব কিনা, খেললেও কিভাবে খেলব। এমনকি ওয়ানডে ফরম্যাটে যেগুলোতে পয়েন্ট সিস্টেম নেই, সেগুলোতে আমার অংশ নেওয়া দরকার আছে কিনা। আমার আসলে আর কোনো অপশন নেই।’

যোগ করেন, ‘বলছি না আমি অবসর নেব টেস্ট থেকে। এমনও হতে পারে যদি ২০২২ বিশ্বকাপের পর আমি আর টি-টোয়েন্টি না খেলি, তখন ওয়ানডে আর টেস্ট খেললাম।’ এর সঙ্গে সাকিব বলে দেন, ‘কিন্তু একসঙ্গে তিন ফরম্যাট চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব এখন।’

নিজের এমন ভাবনার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন সাকিব, ‘আপনি যখন ৪০-৪২ দিনে দুইটা টেস্ট খেলেন, এটা কোনোভাবেই আসলে ফলপ্রসূ বিষয় না। অবশ্যই এগুলো নিয়ে বিসিবির সঙ্গে পরিকল্পনা করা জরুরি। ওই পরিকল্পনা করে সামনে এগোনোটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। জানুয়ারির মধ্যে এই প্ল্যানগুলো করলে পুরো বছরটা জানব আসলে কি হচ্ছে।’

করোনা প্রাদুর্ভাবের পর থেকে সব ধরনের ক্রিকেটই জৈব সুরক্ষা বলয়ে আয়োজন হচ্ছে। সাকিব সেই সুরক্ষা বলয়ে থেকে খেলাকে জেল খানার সঙ্গে তুলনা করেন। বলেন, ‘আমার কাছে সোজা মনে হয়েছে যে, জেল খানায় ‍যদি আপনাকে দিয়ে দেয় সেখানে যেমন জীবন থাকবে, ঠিক তেমনই।’

সাকিবের কথায়, ‘জেল খানায় তবু কারো সঙ্গে কথা বলতে পারবেন। এমন না খেলোয়াড়রা অনেক ঘোরাঘুরি করে, বাইরে যায়, শপিং মলে যায়, সিনেমা হলে যায়, রাস্তা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে তা না। কিন্তু যখন আপনি জানবেনই যে চাইলেও বের হতে পারবেন না, সমস্যাটা ওখানে।’

সাকিব আরো বলেন, ‘আপনি দেখেন নিউজিল্যান্ড ওদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে পাঠাবে না বিশ্বকাপে, শুধু মানসিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে। যেটা মনে হচ্ছে করোনা খুব তাড়াতাড়ি যাওয়ার না। এর ভেতরে বেঁচে থাকতে হলে আমাদের যেটা করতে হবে এখন, অন্য একটা উপায় বের করতে হবে। বায়ো-বাবল বা কোয়ারেন্টাইন হয়তো সেরা সমাধান না।’

সাকিবের স্ত্রী এবং তিন সন্তানই যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। পারিবারিক জীবন এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে সাকিবের কাছে, ‘যখন আপনার তিনটা ছোট ছোট বাচ্চা থাকবে এবং আপনি তাদের সময় দিতে পারবেন না, হঠাৎ যখন ৮-১০ দিনের জন্য দেখা হবে, তারপর আবার আপনি দেড় মাস-দুই মাস বা তিন মাসের জন্য বাইরে। আবার ১৫ দিনের জন্য দেখা হবে। পরিস্থিতিটা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। বাচ্চাদের বড় হওয়ার ক্ষেত্রেও অস্বাস্থ্যকর, ওদের বিকশিত হওয়ার পেছনেও খুবই অস্বাস্থ্যকর। আমি চাই না আমার বাচ্চারা ওই পরিস্থিতে থাকুক।’

সূত্র : দেশ রূপান্তর
এন এইচ, ২৪ ডিসেম্বর

Back to top button