পর্তুগালে নতুন করোনা বিধিনিষেধ
লিসবন, ২২ ডিসেম্বর – পর্তুগালে বড়দিন এবং নতুন বছরকে কেন্দ্র করে পরবর্তী সময়ে ২ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত কিছু বিধিনিষেধ আগে থেকেই জারি করা ছিল। তবে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে ২৫ ডিসেম্বর থেকেই কড়াকড়ি কিছু বিধিনিষেধ ঘোষণা করল পর্তুগিজ সরকার। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ২১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তনিও কস্তা জনগণের উদ্দেশ্যে তা তুলে ধরেন।
২৪ থেকে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের অনুষ্ঠান ও নতুন বছরকে কেন্দ্র করে ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ১ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত বন্ধ স্থানে নতুন বছর উদযাপন করার জন্য যেকোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
পাবলিক প্লেসে নতুন বছরের যে কোনো প্রকার অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে এমনকি একই দিনে পাবলিক প্লেসে ১০ জনের বেশি লোক একসঙ্গে জড়ো হওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাছাড়া উক্ত সময়ে পাবলিক প্লেসে অ্যালকোহল গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সুপার মার্কেট, মিনি মার্কেটসহ সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে জনগণের উপস্থিতি সীমিত করা হয়েছে। যেখানে প্রতি ৫ বর্গমিটারে ১ জন, সব পর্যটন কেন্দ্র বা অবকাশ যাপন কেন্দ্র, ক্রীড়া অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রেও যে কোনো প্রকার অনুষ্ঠানে করোনা নেগেটিভ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক টেলি ওয়ার্ক ও ডে কেয়ার সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে ২৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত (প্রথম প্রহর) থেকে কার্যকর হবে, এতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।
উৎসবকে কেন্দ্র করে বন্ধ থাকছে করোনা টিকাকার্যক্রম ২৪, ২৫, ২৬ ও ৩১ ডিসেম্বর। অপরদিকে অমিক্রণ ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার কারণে দেশের জনগণ এর বিনামূল্যে করোনা টেস্ট এর পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে অর্থাৎ যেখানে প্রতি মাসে ৪ টি করোনা টেস্ট করতে পারতেন এখন তারা ৬ টি টেস্ট করতে পারবেন সম্পূর্ণ বিনা খরচে। এমনকি ফার্মেসীগুলির সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে।
পর্তুগালে বসবাসরত বেশ কয়েকজন প্রবাসীদের সাথে আলাপ কালে তারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ বিষয়টিকে সঠিক মনে করছেন আবার কেউ পূর্ববর্তী জারিকৃত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে দ্বিমত প্রদর্শন করছেন। যেমন পর্তুগালের বসবাসকারী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন, জনগণের স্বাস্থ্য বিবেচনায় বিষয়টি সঠিক হলেও পর্তুগিজ সরকারের স্বাভাবিক মনোভাবে সিদ্ধান্তটা অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। কেননা নতুন বছর এবং বড়দিনকে ঘিরে আমরা একটা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম; যা আমাদের এখন ক্ষতির কারণ হবে।
পর্তুগালে বসবাসকারী প্রবাসী সাংবাদিক ও সংগঠক আনোয়ার এইচ খান ফাহিম বিষয়টিকে পর্তুগিজ সরকারের একটি দূরদর্শী সিদ্ধান্ত মনে করছেন। কেননা পর্তুগালে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল তাতে সব কিছু স্বাভাবিক হবে এটাই মেনে করা হচ্ছিল তবে পরবর্তীতে এই পরিস্থিতি সরকারকে বাধ্য হয়েই এই নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন; যা সময় বিবেচনায় খুবই যুক্তিযুক্ত।
এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে পর্তুগালে দীর্ঘদিনের কর্মজীবী সোহেল রহমান জানান, একটি অনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি প্রতিদিনই কর্মঘণ্টা বা শিডিউল পরিবর্তন হচ্ছে; যা আমাদের জীবনের জন্য অস্বস্তিকর; তবে মহামারীর মাঝে আমাদের এটি মানিয়ে নিতে হবে। তবে তিনি পর্তুগিজ সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
সূত্র : যুগান্তর
এন এইচ, ২২ ডিসেম্বর