সুষ্ঠু বিচার কি পাবেন সার্জেন্ট মহুয়া?
ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর – ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সার্জেন্ট মহুয়া হাজং। তার বাবা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মনোরঞ্জন হাজং গত ২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। একটি বিএমডব্লিউ গাড়ির ধাক্কায় আহত মনোরঞ্জনকে দুই দফা অস্ত্রপচারের পর তার ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়। তিনি বারডেম হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
এই ঘটনায় শুরুতে মামলাই নিতে চায়নি পুলিশ। গাড়ী চালক প্রভাবশালীর সন্তান হওয়ায় পুলিশের মামলা খোদ পুলিশই নেয়নি। এরফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে। আলোচনা সমালোচনার পর ১৬ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮ ও ১০৫ ধারায় সার্জেন্ট মহুয়ার মামলা রেকর্ড করে বনানী থানা। সেখানে গাড়ির চালকের নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা দুজনকে আসামি দেখানো হয়।
অথচ এর দুইদিন আগে ১৪ ডিসেম্বর সেই গাড়ির চালক সাঈদ হাসান বনানী থানায় একটি জিডি করেন। সেখানে দুর্ঘটনার জন্য ‘উল্টো পথে থাকা’ মোটরসাইকেলআরোহী মনোরঞ্জন হাজংকেই দায়ী করেন তিনি। পুলিশ যেখানে ১৪ ডিসেম্বর জানে সেই গাড়ির চালক কে ছিলেন, সেখানে ১৬ ডিসেম্বর মহুয়ার মামলায় চালককে অজ্ঞাতনামা দেখানো হয়।
কিন্তু মহুয়া দাবি করেন, তিনি গাড়ি চালক সাঈদ হাসানের নাম উল্লেখ করেই মামলা করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু সেটা নেয়া হয়নি। এরফলে সাধারণ জনমনে প্রশ্ন জেগেছে আসলেই কী বিচার পাবেন মহুয়া?
যদিও রোববার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেছেন, সার্জেন্ট মহুয়া হাজংয়ের বিষয়টি আমি জানি। এ ঘটনায় আমাদের গুলশান বিভাগের বনানী থানায় একটি মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। মনোরঞ্জন হাজংয়ের পা হারানোর ঘটনায় কার দোষ ছিল তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সার্জেন্ট মহুয়ার করা মামলায় আসামির নাম না থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করলে হাফিজ আক্তার বলেন, নাম না দেয়ার কারণ কী, ঘটনা কী ঘটেছে, সেসব বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কার দোষ সেটি খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে মনোরঞ্জনের একমাত্র মেয়ে মহুয়া হাজং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সার্জেন্ট। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তার বাবাকে ধাক্কা দেয়া লাল রঙের বিএমডব্লিউ গাড়িটির চালকের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে বনানী থানা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, পুলিশ সার্জেন্ট মহুয়া আমাদেরই একজন সদস্য। যেহেতু মামলা হয়েছে, তাই সাধারণ মানুষ যেভাবে বিচার পান, তার বিষয়টি সেভাবে দেখা হবে। তার মামলার বিষয়ে গুলশান বিভাগ কাজ করেছে।
সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এন এইচ, ২০ ডিসেম্বর