অপরাধ

রপ্তানির পোশাক চুরি করে আফ্রিকা-নেপালে পাচার, চোরচক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর – বাংলাদেশের রপ্তানির সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্প। এসব পোশাকের বড় একটি অংশ রপ্তানি হয় চট্টগ্রাম পোর্টের মাধ্যমে। কারখানাগুলো তাদের রপ্তানিযোগ্য পোশাক কার্টনে ভরে কাভার্ডভ্যানে করে পাঠায় পোর্টে। একটি চক্র এসব পোশাকের একটি অংশ কাভার্ডভ্যানের কার্টন থেকে কৌশলে চুরি করে। চুরি করা এসব পোশাক আবার আরেকটি চক্র বিক্রি করে আফ্রিকা-নেপালসহ দেশের বিভিন্ন মার্কেটে। চক্রটি কিছু অসাধু গাড়িচালক, বায়ার ও সিঅ্যান্ডএফ ব্যক্তির যোগসাজশে এসব করে আসছিল।

তৈরি পোশাক কারখানার রপ্তানির পোশাক চুরির ঘটনায় সম্প্রতি ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়। পরে মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি মতিঝিল।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. সবুজ (৩০), মো. মোতাহার হোসেন (৩৮), মো. হানিফ (৩৭), মো. নজরুল ইসলাম (২০) ও মো. আবুল কাশেম (২১)।

রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, সম্প্রতি তৈরি পোশাক রপ্তানির জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পাঠাচ্ছিল অ্যাপ্যারেলস লিমিটেড (এনভয় গ্রুপ) নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তাদের ৫৩ হাজার পোশাক একটি কাভার্ডভ্যানে করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে চুরির ঘটনা ঘটে। কাভার্ডভ্যান থেকে ৬০ লাখ টাকার পোশাক চুরি হয়। এ ঘটনায় ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়। এই ঘটনায় ডিবির গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ ছায়া তদন্ত শুরু করে। অনুসন্ধানে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। যারা প্রতিদিন একাধিক রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যান থেকে পথিমধ্যে গাড়িচালক ও গাড়ির মালিকের যোগসাজশে কৌশলে কার্টন থেকে পণ্য চুরি করে।

তিনি বলেন, রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস পণ্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে যাওয়ার পথে কৌশলে কাভার্ডভ্যানের কার্টন থেকে কিছু পণ্য চুরি করে পুনরায় কার্টনগুলো হুবহু আগের মতো করে রেখে গাড়ি ছেড়ে দেয়। পরবর্তীসময়ে চালক গাড়িটি নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেয়। এরপর বিদেশি ক্রেতারা যখন পণ্য কম পান তখন তারা এজন্য দেশের উৎপাদিত গার্মেন্টসকে দায়ী করেন।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখে পোশাকখাত। রপ্তানি আয়ের মূল খাত এই গার্মেন্টস ব্যবসার ওপর দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। সম্প্রতি রপ্তানিমুখী গার্মেন্টসপণ্য চুরির ফলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্টের পাশাপাশি বিদেশি ক্রেতা হারাতে হচ্ছে, যা এ খাতকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে।

গ্রেফতারদের সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না বা তারা কতদিন ধরে কী পরিমাণ পোশাক চুরি করেছে— সে বিষয়ে আরও বেশি জানার জন্য তাদের রিমান্ডে নিতে আদালতে পাঠানো হবে। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে তাদের এ বিষয়ে আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান ডিবিপ্রধান।

সূত্র: জাগো নিউজ
এম ইউ/১৯ ডিসেম্বর ২০২১

Back to top button