জাতীয়

করোনার বুস্টার ডোজ পাবেন যেভাবে

ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর – ঢাকার একটি কেন্দ্রে রোববার পরীক্ষামূলক টিকাদানের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের বুস্টার ডোজ দেয়ার কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। এদিন বুস্টার ডোজ যাদেরকে দেয়া হবে, তাদেরকে কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরে এর আওতা ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

তবে এই ডোজ কীভাবে পাওয়া যাবে, কীভাবে দেয়া হবে এবং এই ডোজ পেতে পুনঃনিবন্ধন করতে হবে কিনা তা নিয়ে জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, রোববার কয়েকজনকে বুস্টার ডোজ দিয়ে আমরা তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করব। আর যাদের নিবন্ধন আছে তাদেরকেই এই ডোজ দেয়া হবে।

বুস্টার ডোজ পেতে তাহলে পুনঃনিবন্ধন করতে হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার প্রয়োজন হবে না। কারণ যারা টিকা নিয়েছেন তাদের সবার মোবাইল নাম্বার আমাদের কাছে আছে। তাদেরকে আমরা ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়ে দেবো। এজন্য আইসিডিডিআর,বি আমাদের কাছে কিছুদিন সময় নিয়েছে।

প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে যে টিকা দেয়া হয়েছিলো সেটিই তৃতীয় ডোজ হিসেবে বুস্টার ডোজ দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, টেকনিক্যাল কমিটি আমাদেরকে একটা প্রস্তাব পাঠিয়েছে। আমরা সেটা ফলো করছি। আর আমাদের দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বেশি দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে বুস্টার ডোজ হিসেবে হয়তো তাদেরকে দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোনো টিকা দেয়া দেয়া হবে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়রে জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান বলেন, বুস্টার ডোজ উদ্বোধন শেষে সংবাদ সম্মেলন করে এবিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।

এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার ঢাকার একটি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক টিকাদানের মাধ্যমে করোনার বুস্টার ডোজ দেয়ার কর্মসূচি শুরু হবে। যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি, তারা ছাড়াও সম্মুখসারির করোনা যোদ্ধারাও এই বুস্টার ডোজ পাবেন বলে জানা গেছে৷

কাদেরকে বুস্টার ডোজ দেয়া হবে- এবিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি ও চিকিৎসক এবং চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের বুস্টার ডোজ দেয়া হবে।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।

এবিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রায় সাত কোটি মানুষকে করোনার প্রথম ডোজ ও সাড়ে চার কোটি মানুষকে দুই ডোজ করে টিকা দেয়া হয়েছে। আরো প্রায় পাঁচ কোটি টিকা এ মুহূর্তে সরকারের হাতে আছে।

করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেয়া যারা সম্পন্ন করেছেন তাদেরকেই একটি নির্দিষ্ট সময় পর তৃতীয় ডোজ নিতে হবে এবং এটিকেই বুস্টার ডোজ বলা হচ্ছে।

গত ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ৬ কোটি ৭৪ লাখেরও বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ আর দুই ডোজ দেয়া সম্পন্ন হয়েছে ৪ কোটি ৪১ লাখেরও বেশি মানুষকে। এর বাইরে প্রায় ষোল লাখ শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ আর দুই ডোজ টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে দুই লাখ ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর।

দেশে এ মুহূর্তে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, সিনোফার্ম, মডার্না ও সিনোভ্যাক টিকা দেয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশে গত একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১২২ জন। এসময়ে ১৩ হাজার ৭১৬ নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ০.৮৭ তে নেমেছে। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন মৃত্যু নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৪৭ জনে। এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৮০ হাজার ৮৭২ জনে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর দিয়েছিলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এন এইচ, ১৯ ডিসেম্বর

Back to top button