ধানমন্ডির বাসায় চুরি, লন্ডনে বসে দেখলেন মালিক
ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর – মঙ্গলবার রাত চারটা। মুখে কালো মাস্ক পড়ে রাজধানীর ধানমন্ডির ১১/এ নম্বর সড়কের ৭৭/বি বাড়িতে ঢুকে পড়েছে দুই চোর। এরপর বাড়ির আলমারি ভেঙে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা চুরির পর বেরিয়ে যান তারা। এই সময়টুকু নির্দিষ্ট কক্ষে থাকলেও কিছুই টের পাননি বাড়ির কেয়ারটেকার। তবে চুরির শুরু থেকে শেষ দৃশ্য লন্ডনে বসে সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখছিলেন ফ্ল্যাটমালিক একরামুল ওয়াদুদ। পরে চুরির বিষয়টি কেয়ারটেকার আফাজকে জানান তিনি। এই ঘটনায় গতকাল বুধবার ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ করেছেন ওই বাড়ির কেয়ারটেকার।
এরপর ধানমন্ডি থানা পুলিশ, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডির ক্রাইম ইউনিটও। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে থানা পুলিশসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ওই দুই চোরকে ধরতে আদাজল খেয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। চুরির ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার দুটি ভিডিও ফুটেজ গোয়েন্দাদের পাশাপাশি এসেছে প্রতিবেদকের হাতেও। ভবনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো বোনের বাসা বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধানমন্ডির পাঁচতলা বাড়ির তিনতলায় বসবাস করতেন লন্ডন প্রবাসী একরামুল ওয়াদুদ। তিনি দেশের বাইরে থাকায় বাড়িতে ছিলেন নিরাপত্তাকর্মী আফাজ। ঘটনার দিন ওই ফ্ল্যাটের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের রুমের জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করে চোরচক্র। এসময় তারা প্রায় ১৫ ভরি স্বর্ণ ও নগদ কয়েক লাখ টাকা চুরি করে নিয়ে যায় এবং রুমের কয়েকটি আলমারি তছনছ করে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গত বুধবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটের সময় তিনতলায় এক কক্ষের জানালার পর্দা সরিয়ে টর্চলাইট দিয়ে ঘরের ভেতর দেখছেন চোরচক্রের এক সদস্য। ঘরে কেউ নেই নিশ্চিত হয়ে শুরু হয় গ্রিল কাটা। এর পাঁচ মিনিট পর মুখে কালো মাস্ক পরা এক চোর গ্রিল কেটে ওই কক্ষে প্রবেশ করেই দেখতে পায় সিসিটিভি ক্যামেরা। গাঁ বাঁচাতে ওই চোর ক্যামেরার সামনে কাগজ লাগিয়ে দেয়। কিন্তু বিধিবাম। ফ্ল্যাটে থাকা অপর আরেকটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে বাকি ঘটনা। ওই ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, এক রুম থেকে অন্যরুমে প্রবেশের চেষ্টা করছে দুই চোর।
বাড়ির কেয়ারটেকার আফাজ জানান, ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। গৃহকর্তা বিদেশ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে চুরির বিষয়টি তাকে জানান। পরে তিনি রুমে ঢুকে দেখেন চোরচক্র স্বর্ণসহ নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিস নিয়ে গেছে। ফ্ল্যাটের মালিক দেশের বাইরে থাকায় আফাজ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ধানমন্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া জানান, চুরির ঘটনায় বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ। ঘটনার বিষয়ে নিরাপত্তাকর্মী একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর, রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত চোরদের ধরতে অভিযান চলছে। শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সূত্র : আমাদের সময়
এন এইচ, ১০ ডিসেম্বর