আইন-আদালত

অর্থপাচার: ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তালিকা হাইকোর্টে

ঢাকা, ০৫ ডিসেম্বর – অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ১৪টি প্রতিষ্ঠান ও ২৯ ব্যক্তির তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তালিকায় বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের নামও রয়েছে।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রোববার এ তালিকা দাখিল করা হয়। পরে এ বিষয়টি সোমবার ফের শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে। এ দিন দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশিদ আলম খান প্রতিবেদন দাখিল করে।

আংশিক শুনানিতে তিনি আদালতে বলেন, দুদক দুর্নীতি ও ঘুষ সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তের এখতিয়ার রাখে। এজন্য প্রতিষ্ঠানের কিছু আইনগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিশেষ করে তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের বিষয়ে তদন্তের ক্ষেত্রে নানা সীমাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তালিকার অনেকেই প্রবাসী এবং সেখানে অর্থপাচার করে নিয়ে গেছেন। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক একাধিক প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাই তদন্ত বিঘ্নিত হচ্ছে।

তালিকায় উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের প্রমাণ মিলেছে কিনা, এমন প্রশ্নে খুরশীদ আলম খান বলেন, বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের নাম সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়ে মূলত যাদের বিরুদ্ধে দুদক এখন তদন্ত করছে, সেই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

দুদকের তালিকায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-ব্যবসায়ী মাল্টিমোড লিমিটেডের আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার স্ত্রী নাসরিন ফাতেমা আউয়াল এবং এই দম্পতির সন্তান তাবিথ আউয়াল, তাফসির আউয়াল ও তাজওয়ার মো. আউয়াল, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক প্রবাসী মোগল ফরিদা ওয়াই, টেপাসের শহিদ উল্লাহ, ঢাকার বনানীর চৌধুরী ফয়সাল, বারিধারার আহমাদ সামির, ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড, ভেনাস ওভারসিজ কোং-এর মুসা বিন শমসের, ডাইনামিক এনার্জির ফজলে এলাহী, ইন্ট্রিপিড গ্রুপের কেএইচ আসাদুল ইসলাম, খালেদা শিপিং কোম্পানির জুলফিকার আহমেদ, বেঙ্গল শিপিং লাইনসের তাজুল সলাম তাজুল, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের মোহাম্মদ মালেক, ওসান আইস শিপিং কোম্পানির ইমরান রহমান, শামস শিপিং লিমিটিডের মোহাম্মদ এ আউয়াল, ঢাকার উত্তরার এরিক জনসন আনড্রেস উইলসন, ইন্ট্রিডিপ গ্রুপের ফারহান ইয়াকুবুর রহমান, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের তাজুল ইসলাম, পদ্মা টেক্সটাইলের আমানুল্লাহ চাগলা, রাশিয়ার নিউটেকনোলজি ইনভেস্টমেন্টের মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান, মাল্টার মোহাম্মদ রেজাউল হক, নারায়ণগঞ্জের জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ কামাল ভুইয়া, তুহিন-সুমন, সেলকন শিপিং কোম্পানির মাহতাবা রহমান, নারায়ণগঞ্জের জেমিকো ট্রেড ইন্টান্যাশনালের ফারুক পালওয়ান, আয়ারল্যান্ডের গ্লোবাল এডুকেশন সিস্টেমের মাহমুদ হোসাইন, ঢাকা ইপিজেডেরসাউদার্ন আইস শিপিং কোম্পানির শাহনাজ হুদা রাজ্জাক।

বিদেশি ব্যাংক, বিশেষত সুইস ব্যাংকে পাচার করা ‘বিপুল পরিমাণ’ অর্থ উদ্ধারের যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস। পরে ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তালিকা দাখিল করে দুদক।

সূত্র: সমকাল
এম ইউ/০৫ ডিসেম্বর ২০২১

Back to top button