গবেষণা

চীনা বিজ্ঞানীদের করোনার ‘প্যানাসিয়া’ অ্যান্টিবডি আবিষ্কারের দাবি

করোনা ভাইরাসের সব ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিবডি আবিষ্কারের দাবি করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলবার নতুন এক গবেষণার শেষে সান ইয়াত-সেন ইউনিভার্সিটি ও ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটিসহ চীনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক রিপোর্টে বলেছেন, গবেষণাগারে পরীক্ষা ও প্রাণীর ওপর প্রয়োগে এর ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। তাদের মতে, এই অ্যান্টবডি করোনার ‘প্যানাসিয়া’ তথা ‘সব করোনার ওষুধ’ হয়ে উঠতে পারে।

করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকেই একের পর এক নতুন ধরন (ভ্যারিয়েন্ট) ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বজুড়ে। প্রতিটি নতুন ধরনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে মোকাবিলা করে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যখন করোনা বিধিনিষেধ তুলে দিতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই হানা দিয়েছে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’। এই ভ্যারিয়েন্টকে কিভাবে বশে আনা যায় তা নিয়ে চলছে ব্যাপক গবেষণা।

রিপোর্টে বলা হয়, মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ৩৫বি৫ নামে একটি বিশেষ অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে যা ইতোমধ্যে ভিট্রো তথা ল্যাবরেটরিতে টেস্ট-টিউব পরীক্ষা ও ভিভো বা জীবন্ত প্রাণীর ওপর পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এটি বন্য ধরনের করোনার (ওয়াইল্ড-টাইপ, মিউটেশনহীন) পাশাপাশি ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ (ভ্যারিয়েন্টস অব কনসার্ন) উভয় ক্ষেত্রেই ভালো ফলাফল দেখিয়েছে। ভিভো পরীক্ষাগুলো ইঁদুরের ওপর করা হয়েছিল।

রিপোর্টে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন, এই অ্যান্টিবডি অতি রূপান্তিত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেও কাজ করে, যা এ বছরের শুরুতে ভারতে প্রথম আবির্ভূত হয় এবং বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব চালায়। রিপোর্টের ব্যাখ্যায় বলা হয়, ৩৫বি৫ একটি অনন্য এপিটোপকে লক্ষ্য করে করোনা নিরপেক্ষ করে (অ্যান্টিজেন অণুর অংশ যা অ্যান্টিবডি নিজেকে সংযুক্ত করে) যা প্রচলিত মিউটেশন সাইটগুলোকে এড়িয়ে যায়। অন্যভাবে বলতে গেলে, ৩৫বি৫ ভাইরাসের একটি অনন্য অংশকে লক্ষ করে যা মিউটেশন প্রক্রিয়ার সময় পরিবর্তন হয় না।

ভাইরাসের এমন অংশকে টার্গেট করে যা ভিওসির সঞ্চালনে চিহ্নিত মিউটেশন দ্বারা প্রভাবিত হয় না। অ্যান্টিবডি ৩৫বি৫ একাধিক স্ট্রেনজুড়ে ‘নিরপেক্ষপূর্ব কার্যকারিতা’র ক্ষমতা প্রদর্শন করে। এই ফলাফল বিষয়ে বিজ্ঞানীদের যুক্তি, একটি সর্বজনীন করোনা ভ্যাকসিনের যুক্তিসঙ্গত নকশার জন্য শোষিত হতে পারে। অ্যান্টিবডি ৩৫বি৫ অ্যান্টিজেনের অংশটিকে টার্গেট করবে, যা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আছে, গবেষকরা বলেন। গবেষণাটি ওমিক্রনের বিস্তারের মধ্যে একটি মূল্যবান সংযোজন। কেননা, ওমিক্রন দ্রুত পরিবর্তনশীল। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন, এই ভ্যারিয়েন্টটি টিকা এড়িয়ে যেতে পারে এবং পূর্ববর্তী সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা বা করোনাজয়ীদের জন্যও ক্ষতিকারক হতে পারে।

এন এইচ, ০৪ ডিসেম্বর

Back to top button