ইউরোপ

বিদায় নিলেন ম্যার্কেল

বার্লিন, ০৩ ডিসেম্বর – জার্মানিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঠিক আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিলেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। দীর্ঘ ১৬ বছরের কার্যকালের পর জার্মানির স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেন তিনি। আগামী সপ্তাহে নতুন সরকারের কার্যভার গ্রহণ করার কথা রয়েছে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, যথাযোগ্য সামরিক মর্যাদার সঙ্গে বার্লিনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে সেই অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ ও সেনাদের অর্কেস্ট্রায় বাজনা শোনানো হয়।

বিদায় নেয়ার আগে দেয়া ভাষণে ম্যার্কেল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার পক্ষে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘যখনই কোথাও ঘৃণা ও হিংসাকে নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার বৈধ হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করা হয়, তখনই গণতন্ত্রকামী হিসেবে আমাদের সহিঞ্চুতার সীমা শেষ হওয়া উচিত।’

তিনি জার্মানির মানুষের উদ্দেশ্যে ঘৃণার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও সবসময়ে জগতকে দেখার পরামর্শ দেন তিনি। কখনোই আশাবাদ ত্যাগ না করারও ডাক দেন ম্যার্কেল।

ম্যার্কেল নিজের কার্যকালে বিভিন্ন সংকটের উল্লেখ করেন। জলবায়ু পরিবর্তন, ডিজিটালাইজেশন, শরণার্থী সংকটের মতো বিশাল চ্যালঞ্জ সামলাতে নিজের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও বহুপাক্ষিক কাঠামোগুলোকে ম্যার্কেল অপরিহার্য বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাজনীতিক ও মানুষ হিসেবে তিনি এমন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করেছেন।

বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ম্যার্কেলের সম্ভাব্য উত্তরসূরী ওলাফ শলৎস। ম্যার্কেল তাকে ও তার ভবিষ্যৎ প্রশাসনকে আন্তরিক শুভকামনা জানান। প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ারও ম্যার্কেলকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন।

করোনা সংকটের কারণে অনুষ্ঠানে বেশি সংখ্যক অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো সম্ভব হয়নি। তবে চরম দক্ষিণপন্থী এএফডি ছাড়া জার্মানির অন্য সব রাজনৈতিক শক্তির প্রতিনিধিরা ম্যার্কেলের বিদায়ী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন।

কোনো বেসামরিক ব্যক্তিকে সম্মান জানাতে জার্মান সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ সম্মান এ অনুষ্ঠান। সাধারণত চ্যান্সেলর, প্রেসিডেন্ট ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বিদায় জানাতে এ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। ষোড়শ শতাব্দী থেকে এ ঐতিহ্য চলে আসছে।

সন্ধ্যাকালীন এই অনুষ্ঠানে বিদায়ী নেতার পছন্দের সুরের পাশাপাশি জাতীয় সংগীতও পরিবেশন করা হয়। ম্যার্কেল নিজের পছন্দের তিনটি গান বাছাই করেছিলেন। সাবেক পূর্ব জার্মানিতে থাকাকালে ও জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে এ গানগুলো তার মনে রেখাপাত করেছে।

আনুষ্ঠানিক বিদায়ের পরও কয়েকদিন কার্যনির্বাহী চ্যান্সেলর হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে হবে ম্যার্কেলকে। বিশেষ করে করোনা সংকটের কারণে জার্মানিতে এ মুহূর্তে বিদায়ী সরকারের পক্ষেও নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকা সম্ভব নয়। ভবিষ্যৎ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে করোনা সংকট মোকাবেলায় ইতোমধ্যেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়েছে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/০৩ ডিসেম্বর ২০২১

Back to top button