পশ্চিমবঙ্গ

‘আমি মমতার সৈনিক’, নির্দল থেকে ফের দলে রতন মালাকার

সরে দাঁড়ালেন রতন মালাকার। বিগত তিনবারের প্রাক্তন কাউন্সিলর রতন মালাকার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর প্রার্থী পদ প্রত্য়াহার করলেন। ওই ওয়ার্ডেই এ বার তৃণমূলের (TMC) তরফে প্রার্থী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। তালিকায় নিজের নাম দেখতে না পেয়ে ‘অভিমানে’ নির্দল হিসেবে প্রার্থী পদের জন্য নমিনেশন জমা দিয়েছিলেন রতন। অবশেষে তিনি সেই নমিনেশন প্রত্যাহার করলেন বলে খবর সূত্রের।

কেন এই প্রত্যাহার? রতন মালাকার খোদ টেলিফোনে TV9 বাংলাকে জানান, “নিজের ইচ্ছেয় প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করলাম। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। যেদিন আমি দেখেছি আমার নাম নেই, আমার সেদিন কষ্ট হয়েছিলাম। আমি তৃণমূলে রয়েছি, ছিলাম, থাকব।”

প্রসঙ্গত ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওয়ার্ড। সেই ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর ছিলেন রতন মালাকার। দীর্ঘদিন ধরে সেই পদে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এবার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন রতন মালাকার। দলীয় সূত্রে খবর, সংগঠন সম্পর্কে ধ্যান ধারনা খুব বেশি ছিল না রতন মালাকারের। দলের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভও ছিল বলে শোনা যায়। তাই সম্ভবত এবার বাদ পড়লেন তিনি। আর সেই জায়গায় টিকিট পান মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়া ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর সে ভাবে পরিবারের অন্য সদস্যদের সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। পরে উত্থান হয়েছে ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রথমে সাংসদ হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন তিনি। আর বর্তমানে তিনি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। একুশের নির্বাচনে দলের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পরিবারতন্ত্রের নানা কথা বলে তৃণমূলকে বারবার বিঁধেছে বিজেপি নেতৃত্ব। এবার ফের আরও এক সদস্যের রাজনীতিতে পদার্পণ।শুধু কাজরীই নয়। প্রার্থী তালিকায় বেশ কয়েকটি নাম থেকেই স্পষ্ট যে পরিবারতন্ত্রকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ঘাসফুল শিবিরে। তালিকায় রয়েছেন শশী পাঁজার মেয়ে পূজা পাঁজা-সহ আরও অনেকে।

পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর টিকিট না পেয়ে নির্দলে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন রতন। সরাসরি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করে রতন বলেছিলেন, “আমি স্বেচ্ছায় নির্দল প্রার্থী হয়েছি। কারও বিরুদ্ধে আমার কিছু বলার নেই।”

উল্লেখ্য, গত ২০০০ সালে ৭১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথমবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হন রতন মালাকার। ২০০৫, ২০১০ এবং ২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রীর ওয়ার্ড থেকেই কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। এ বার তাঁকেই বাদ দিয়ে দেওয়ায় কার্যত ‘অভিমানেই’ নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নেন রতন।

এরই মধ্যে, তৃণমূলে টিকিট না পেয়ে শনিবার ক্ষোভে কংগ্রেসে চলে গিয়েছিলেন পার্থ মিত্র (Partha Mitra)। যোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতে পান ভোটের টিকিট। আসন্ন পুরভোটে ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তাঁকে প্রার্থী করে কংগ্রেস। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না পেরতেই ফের ‘ঘরওয়াপসি’ তাঁর। স্পষ্টই জানান, তিনি তৃণমূলে রয়েছেন। এমনকি ভোটে লড়াই করাটা তাঁর কাছে কোনও বড় বিষয় নয়! শুধু তাই নয়, ফিরহাদ হাকিমকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর চাঞ্চল্যকর দাবি, তাঁর নামে মিথ্যা প্রচার করা হয়েছিল!

গত শনিবার, তাঁর দলত্যাগ প্রসঙ্গে পার্থ দাবি করেছিলেন ‘বড় খেলা’ আছে। জানান, “কংগ্রেসের হয়েই লড়ব। দশ বছর তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছি। আমার এলাকায় এসে দেখে যান, কোনও খুঁত আছে কি না। ইট টু ইট দেখে যান। তৃণমূল কী জন্য টিকিট দিল না, আমি জানি না। সেই জন্য আমি কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। বলল, আমরা তোমাকে টিকিট দেব। যোগাযোগ করব।”

তারপরেই পরেরদিন অর্থাত্‍ রবিবার, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে সঙ্গে নিয়ে তিনিই জানালেন, তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন! পাশাপাশি এও জানান, তাঁর নামে মিথ্যা প্রচার হয়েছিল। এ বার সেই দলে পা বাড়ালেন রতন।

সূত্র : টিভি৯ বাংলা

Back to top button