জাতীয়

‘খা‌লেদা জিয়া‌কে মে‌রে গণঅভ্যুত্থান ঘটা‌তে চায় বিএন‌পি’

ঢাকা, ০১ ডিসেম্বর – বিএন‌পি চেয়ারপারসন খা‌লেদা জিয়া‌কে মে‌রে ফে‌লে এক‌টি গণঅভ্যুত্থান তৈ‌রি ক‌রে তা‌রেক রহমান‌কে এনে দে‌শে ইরা‌নের খা‌মেনীর ম‌তো এক‌টি বিপ্লব করতে দল‌টির নেতারা দুঃস্বপ্ন দেখ‌ছে ব‌লে দা‌বি ক‌রে‌ছেন আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কা‌দের।

বুধবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা, ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র এবং দলীয় সাংসদ‌দের স‌ঙ্গে মহান বিজয় দিবস উদযাপন নি‌য়ে বৈঠক ক‌রেন তি‌নি।

সাংবা‌দিকদের এক প্রশ্নের ওবায়দুল কা‌দের ব‌লেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করতে চায় বিএন‌পি। রাজনীতির মাঠ গরম করে তাদের ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের জাগিয়ে তুলতে চায়। তারা দেশে একটা বিশৃঙ্খলা করতে চায়।

‘বাংলাদেশের বাতাসে গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে খালেদা জিয়া মরলে যে পরিস্থিতি তৈরি হবে, কীভাবে একটি গণঅভ্যুত্থান তৈরি করা যায়; সেই নীলনকশা পরিকল্পনা তৈরি করছে। খালেদা জিয়া মারা গেলে গণঅভ্যুত্থানকে সৃষ্টি ক‌রে সে‌টি কেন্দ্র করে তারেক রহমানকে টেমস নদীর পাড় থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে এখানে খা‌মেনী স্টাইলে বিপ্লব করার দুঃস্বপ্নই দেখাচ্ছে বিএন‌পি।’

‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বাধা নেই, বাধা দিচ্ছে সরকার’ বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি যত না উদ্বিগ্ন তার চেয়ে বেশি হচ্ছে তার স্বাস্থ্যকে কেন্দ্র করে তারা রাজনীতির ইস্যু খুঁজে বেড়াচ্ছে। এটার মধ্য দিয়ে তারা রাজনীতির মাঠ গরম করতে চায়, তাদের ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের চাঙা করতে চায়। তারা দেশে একটা বিশৃঙ্খলার আবর্ত তৈরি করতে চায়। সে কারণে বেগম জিয়াকে নিয়ে তারা একেক সময় একেক কথা বলছে। বেগম জিয়াকে নিয়ে বিএনপির এমন বক্তব্য দিয়ে তারা প্রমাণ করেছে তারা আইনের শাসনের প্রতি কোন তোয়াক্কা করে না। তারা আইন, বিচার মানে না।’

স্লো পয়জনিং করে খালেদা জিয়াকে মারা ষড়যন্ত্র করছে সরকার বিএনপি মহাসচিবের এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল কী করে বলেন, স্লো পয়জনিং করে বেগম জিয়াকে মারা ষড়যন্ত্র করছে সরকার? মির্জা ফখরুলের ওই বক্তব্যকে অবান্তর ও হাস্যকর বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি।

‘ডাক্তার সব আপনাদের, আওয়ামী লীগের ডাক্তার তো ওখানে ঢুকতে দেন না। গৃহপরিচালিকা আগেও ছিল এখনও আছে, সঙ্গে মির্জা ফখরুলরা ঘুরঘুর করেন। স্লো পয়জনিং করলে তো আপনারাই করছেন।’

বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা করছে মন্তব‌্য ক‌রে কা‌দের ব‌লেন, সামনে বিদেশি মেহমানরা আসবেন। সে সময়ে এখানে একটা অশুভ পরিস্থিতি তৈরি করার প্রাণান্তকর অপপ্রয়াশ আমরা লক্ষ্য করছি। বিশেষ করে বিএনপি বিভিন্নভাবে সামাজিক আন্দোলনগুলোতে, ছাত্রদের হাফ ভাড়ার দাবি, নিরাপদ সড়ক, গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলনে বাতাস দিচ্ছে, উস্কানি দিচ্ছে। মাঠে নামার জন্য বিভিন্নভাবে তারা একটা সহিংস বিশৃঙ্খলার আবর্ত তৈরি করার সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে।

বর্তমান সময়কে চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য অবশ্যই একটা চ্যালেঞ্জিং সময়। যা আমরা রাজপথে থেকে মোকাবিলা করবো। যে কোন শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, আন্দোলনকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু আন্দোলনে যদি সহিংসতার উপাদান যুক্ত হয় যেটা তাদের অতীতের চর্চা। অতীতেও তারা আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও করেছে। বাস পুড়িয়েছে, ভূমি অফিস পুড়িয়েছে, রেল লাইন উড়িয়ে দিয়েছে। মানুষ পুড়িয়ে শত শত মানুষকে তারা হত্যা করেছে। যার ইতিহাস বেশিদিন আগের নয়। তারা আবার এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। এ জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মেয়ররা এখানে আছেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আমরা ঢাকা শহরকে বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করতে চাই। এখানে আলোকসজ্জা করবো। আমাদের কর্মসূচির মধ্যে ১৮ ডিসেম্বর বিশেষভাবে রয়েছে, উৎসবমুখর বিজয়শোভা যাত্রা করবো, যা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন থেকে শুরু হয়ে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত আমরা এই শোভাযাত্রা করবো। সুবিশাল এই বিজয় শোভাযাত্রাকে সফল করে তোলার জন্য আমরা এখানে জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, মির্জা আজম এবং ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: রাইজিংবিডি
এম ইউ/০১ ডিসেম্বর ২০২১

Back to top button