আইন-আদালত

অর্থ পাচার: মানিক প্রামাণিককে আত্মসমর্পণের নির্দেশ হাই কোর্টের

ঢাকা, ২৩ নভেম্বর – অর্থ পাচার ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস মামলার আসামি অগ্রণী ব্যাংকের বরখাস্ত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মানিক কুমার প্রামাণিকের আগাম জামিনের আবেদন নাকচ করে ছয় সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

মানিক কুমার প্রামাণিকের পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

পরে মোহাম্মদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, জামিন না দিয়ে মানিক কুমার প্রামাণিককে ছয় সপ্তাহের মধ্যে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মানিক কুমার প্রামাণিকসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে অগ্রণী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা (বরখাস্ত) মানিক, জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা রকিবুল হাসান (বরখাস্ত) এবং দুদকের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) মফিজুর রহমানের কোটি কোটি টাকা পাচারের তথ্য পায় পুলিশ।

পরে এই তিন জনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বাড্ডা থানায় অর্থ পাচার আইনে মামলা করা হয়।

সেখানে বলা হয়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে অগ্রণী ব্যাংকে মানিক কুমার প্রামাণিকের মূল বেতন ছিল ২৪ হাজার ২৬০ টাকা। বাসা ভাড়া, চিকিৎসা ভাতাসহ সব মিলিয়ে পেতেন ৩৫ হাজার ৪৬৪ টাকা।

অথচ তার এবং তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নয়টি ব্যাংক হিসাবে ওই সময়ে ৪ কোটি ৮ লাখ ৫৬ হাজার ৩৪৯ টাকা জমা হয়েছে এবং ৪ কোটি ৮ লাখ ১৬ হাজার ৩৩৭ টাকা তোলা হয়েছে। ৪৮ লাখ টাকা দিয়ে তিনি একটি নিশান গাড়ি কেনেন, ৪ কোটি টাকা দিয়ে রাজশাহীতে বানান ডুপ্লেক্স বাড়ি।

‘অপরাধের মাধ্যমে পাওয়া’ অর্থের তথ্য আড়াল করতে মানিক পরিচয় গোপন করে রেবা ট্রেডার্সের নামে খোলা ব্যাংক হিসাবে টাকা লেনদেন করতেন বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

সিআইডি বলেছে, অগ্রণী ব্যাংকে মানিকের তিনটি হিসাবে যথাক্রমে ১ কোটি ১৬ লাখ ৮ হাজার ৯৬ টাকা, ১ কোটি ৩৬ লাখ ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং ৪ লাখ ৩১ হাজার ৪৬১ টাকা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সিটি ব্যাংকে মানিকের ব্যাংক হিসাবে পাওয়া গেছে ৫০ লাখ ৮৬ হাজার ৭৪০ টাকা।

অগ্রণী ব্যাংকে মানিকের স্ত্রী রিপা রানী মণ্ডলের হিসাবে পাওয়া গেছে ৯০ লাখ ২০ হাজার ৮২৫ টাকা। মানিকের ছোট ভাই হীরা কুমারের ব্যাংক হিসাবে পাওয়া গেছে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ২০ টাকা। আর মানিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট মেসার্স রেবা ট্রেডার্সের ব্যাংক হিসাবে পাওয়া গেছে ৪ কোটি ৭৮ লাখ ৯৬ হাজার ৪৪৩ টাকা।

মামলায় বলা হয়েছে, মানিক ব্যাংকে চাকরি করলেও বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে ছাত্র ভর্তি ও নিয়োগ প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়ে অবৈধ টাকা উপার্জন করাই ছিল তার পেশা।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/২৩ নভেম্বর ২০২১

Back to top button