ব্যক্তিত্ব

যে ১০টি কারণে বিষাক্ত হয়ে উঠছে আপনার জীবন!

আপনি জীবনে সুখি নন, ব্যক্তিগত জীবন, কর্মক্ষেত্রে কোথাও শান্তি পাচ্ছেন না। একবার ভেবে দেখুন, এত অশান্তির পেছনে কে দায়ী? আপনার জীবন কি অন্য কেউ বিষিয়ে তুলছে? নাকি আপনি নিজেই তাদেরকে এই সুযোগ দিচ্ছেন? জেনে নিন যে কারণগুলো বিষাক্ত করে তুলছে আপনার জীবন। এড়িয়ে চলুন এসব কারণ ও তার পেছনের মানুষগুলোকে-

১। নিজের চেহারা, পোশাক বা পছন্দের ব্যাপারে কেউ আপনাকে খোঁটা দিচ্ছে
হ্যাঁ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিয়মের মাঝে থাকা জরুরী। যেমন মিটিং এর সময়ে আপনাকে নির্দিষ্ট ড্রেস কোড মেনে চলতে হবে। কিন্তু এর বাইরে আপনার পোশাক, চেহারা, গায়ের রঙ, শরীরের গড়ন আপনার পছন্দের মানুষটিকে নিয়ে যদি কেউ আপনাকে খোঁটা দেবার চেষ্টা করে, তবে অবশ্যই তা চুপচাপ মেনে নেবেন না! আপনি নিজের বাহ্যিক রূপ এবং নিজের পছন্দের জন্য কারো কাছে জবাবদিহি করতে রাজি নন। আর মনে রাখবেন, এসব মানুষ সাধারণত নিজের জীবনে ব্যর্থ বলেই তারা আপনার জীবনে নাক গলাতে আসেন।

২। ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবনের মাঝে একটি বেছে নিতে কেউ বাধ্য করছে আপনাকে
না, শুধু কর্মক্ষেত্রে নয়, বাড়িতেও এই ব্যাপারটি নিয়ে চাপ দেওয়া হতে পারে আপনাকে। হয় বাড়িতে আরো সময় দাও নয়তো চাকরি ছেড়ে দাও- এমনটা আপনার পরিবারের মানুষ আপনাকে বলতে পারে। আবার, মন দিয়ে চাকরি করো, বাসায় এত সময় দেয়া যাবে না- এমনটাও শুনতে হতে পারে কর্মকর্তার মুখ থেকে। না, তাদের চাপে হাল ছেড়ে দেবেন না। কর্মক্ষেত্র এবং ব্যক্তিগত জীবন উভয় দিকেই সমান মনোযোগ দিতে পারাটা আপনার অধিকার।

৩। আপনার জীবনের বড় সিদ্ধান্তগুলো অন্য কেউ নিচ্ছে
হয়তো আপনার বাবা-মা আপনার ভালো চান। তারা জীবনের ব্যাপারে হয়তো আপনার চাইতে বেশি জানেন। কিন্তু তারমানে এই নয় যে আপনার জীবনের সিদ্ধান্তগুলো নেবার অধিকার তাদের আছে। তাদের প্রতি আপনি যতই কৃতজ্ঞ থাকুন না কেন, জীবনটা আপনার। আর প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হিসেবে সে জীবনের ব্যাপারে যে কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়াটাও আপনার অধিকার। তারা একটা সময় থাকবেন না, তাদের সিদ্ধান্তের কারণে আপনাকে নিরানন্দ জীবনযাপন করতে হবে। তাই তাদের অখুশির কারণ হলেও, আপনার জীবনের ব্যাপারে সিদ্ধান্তগুলো আপনারই নেওয়া উচিত।

৪। আপনার সম্পর্কে আনন্দ নেই
একটি চুটকি প্রচলিত আছে- “আপনি সারাক্ষণই কান্নাকাটি করছেন, তাহলে আপনার ভালোবাসার মানুষটি কি আসলে একটি মানুষ নাকি একটি পিঁয়াজ?” না, আপনার সঙ্গী যদি আপনাকে সুখী করতে না পারে তারমানে এই নয় যে আপনি সাথে সাথেই তার সাথে ব্রেকআপ করবেন। কিন্তু তার সাথে থাকার কারণে যদি আপনার জীবন কঠিন হয়ে ওঠে, তাহলে আপনি দ্বিতীয়বার চিন্তা করতেই পারেন তার পাশে থাকার ব্যাপারে।

৫। আপনার সঙ্গী যদি আপনাকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনা বাধ্য করে
আপনার শরীরের অধিকার আপনারি কাছে। কেউ আপনাকে বাধ্য করতে পারে না আপনার শরীর নিয়ে কিছু করতে, সে আপনার স্বামী বা স্ত্রী হলেও। আপনার সম্পূর্ণ অধিকার আছে যে কোনো সময়ে “না” বলার। সে যদি আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে জোরাজুরি করে তবে তাকে আপনার জীবন থেকে বার দেবার ব্যাপারে আপনার ভালোভাবে চিন্তা করা উচিত।

৬। কাছের মানুষের নিয়মিত মিথ্যা ও প্রতারণা
আপনার পরিবার, বন্ধু এমনকি জীবনসঙ্গীর থেকে নিয়মিত প্রতারণার শিকার হওয়াটা কারো জন্যই ভালো নয়। মনে রাখবেন, কেউ যদি সত্যিই আপনাকে ভালোবাসে সে কখনোই আপনাকে ক্রমাগত মিথ্যে বলে যাবে না।

৭। কর্মক্ষেত্রে অসম্মানিত হওয়া
দুঃখজনক হলেও সত্যি, সহকর্মী অথবা কর্মকর্তার হাতে অনেকেই অপদস্থ হয়ে থাকেন। এমন পরিস্থিতি যদি আপনার ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে, ভাবুন, এমন বাজে পরিবেশের কর্মক্ষেত্রে কি আপনার থাকার দরকার আছে? নাকি অন্য কোথাও চাকরির খোঁজ করলেই ভালো হবে? নিজের সম্মান রক্ষার অধিকার আপনার আছে। কেউ যদি আপনাকে অপদস্থ করার চেষ্টা করে, ঠাণ্ডা মাথায় তার প্রতিবাদ করুন।

৮। শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার
কেউ যদি নিয়মিত আপনাকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করে, তার কোনো ক্ষমাই হয় না। নিজের নিরাপত্তার কথা সবার আগে ভাবুন। সে আপনার পরিবার হোক বা ভালোবাসার মানুষ, তার সাথে কখনোই আপনার থাকা উচিত নয়।

৯। কেউ যদি আপনার জীবন নিয়ন্ত্রণ করতে চায়
আপনি কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, কার সাথে মিশছেন- এসব ব্যাপারে কেউ যদি ক্রমাগত আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে তবে বুঝতে হবে সেই মানুষটি আপনার জন্য ক্ষতিকর। সবারই জীবনে কিছুটা প্রাইভেসি দরকার হয়। আর ভালোবাসার মানুষটি যদি আপনাকে বিশ্বাস নাই করে তাহলে সে সম্পর্ক টিকবে না।

১০। ক্রমাগত নিখুঁত হবার প্রত্যাশা
“নিখুঁত” হওয়াটা অসম্ভব। প্রতিদিনও পরিবারের থেকে নিখুঁত “আদর্শ সন্তান”, সঙ্গীর থেকে “পারফেক্ট গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড”, সমাজের থেকে “আদর্শ নারী” হবার কথা শুনতে হয় আমাদের সবাইকেই। কিন্তু তারমানে এই নয় যে অন্য কারো প্রত্যাশা পূরণ করতে আপনি নিজেকে পাল্টে ফেলবেন। অন্যদের চাইতে আপনি আলাদা হতে পারেন, কিন্তু তার জন্য আপনাকে খোঁটা দেবার অধিকার কারো নেই।

এম ইউ

Back to top button