সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জে শিশুদের নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, শিক্ষককে অব্যাহতি

সুনামগঞ্জ, ১৬ নভেম্বর – সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার হাজী ইউসুফ আলী এতিমখানায় হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ৮ বছরের এক শিশুকে শিক্ষকের মারধর করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

নির্যাতিত শিশুটির নাম আবু তাহের (৮)। সে উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা।

সম্প্রতি ওই শিশুকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি কয়েক মাস আগের। নির্যাতনের ঘটনাটি মাদ্রাসার অন্য কোনো শিক্ষক গোপনে ধারণ করেন।

এ বিষয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বলছে, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় যে নির্যাতন করেছিল তাকে এবং যে ভিডিও ধারণ করেছিল তাকেও অব্যাহতি দিয়েছি।

দুই মিনিট দুই সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, পাজামা-পাঞ্জাবি পরা তিন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে আছে। ওই মাদ্রাসা শিক্ষক তাদের মধ্যে এক শিশুর দুই হাতে বেত দিয়ে আঘাত করছেন।

ভিডিওটিতে আরও দেখা যায়, শিক্ষকের পিটুনি খেয়ে শিশুটি উচ্চকণ্ঠে ‘হুজুর আর ইতা করতাম না হুজুর’, ‘আর ইতা করতাম না’ বলে চেঁচিয়ে কাঁদছে। এরপরেও শিশুটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বেত দিয়ে আঘাত করতে থাকেন ওই শিক্ষক। একপর্যায়ে শিশুটি ওই শিক্ষকের পায়ে ধরে। পরে স্টিলের স্কেল দিয়ে ওই শিক্ষক তাকে মারতে থাকেন।

তার আগে আরও দুই শিশু শফিউর ও নিলয়কেও পেটানো হয়।

এভাবে শিশুদের পেটানো ছাতক উপজেলার হাজী ইউসুফ আলী এতিমখানায় হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার মোহতামিম (অধ্যক্ষ) মো.আব্দুল মুকিত কয়েক বছর আগে ওই মাদ্রাসায় নিয়োগ পান। তিনি উপজেলার রহমতপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিয়োগের পর থেকে তিনি প্রায়ই শিশুদের মারধর করতেন।

প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো.কমর উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি বেশ আগের। এ ঘটনায় নির্যাতনকারী শিক্ষকসহ ভিডিও ধারণকারী শিক্ষকও জড়িত। দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। তাই আমরা দুজনকেই চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছি।

হাজী ইউসুফ আলী এতিমখানায় হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো.গোলাম রসুল বলেন, মাওলানা আব্দুল মুকিতকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিন শিশুকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, আমরা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এন এইচ, ১৬ নভেম্বর

Back to top button