ক্রিকেট

ডমিঙ্গো যেন মুকুটহীন রাজা!

ঢাকা, ১৫ নভেম্বর – বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের প্রভাব যেন টের পাচ্ছেন রাসেল ডমিঙ্গো। মনে হচ্ছে প্রধান কোচ যেন মুকুটহীন রাজা! তার ভেতরে অস্বস্তি আছে, কিন্তু সেটি দূর করার ক্ষমতা নেই। গত দুদিনের দলীয় অনুশীলনে ঠিক তেমন চিত্রই ফুটে উঠেছে। সোমবার ১২টা থেকে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শুরু হলেও ডমিঙ্গোকে মাঠে দেখা যায় দুপুর দুইটার কিছুক্ষণ আগে। ক্রিকেটাররা মাঠে ছিলেন ঠিকই কিন্তু বাংলাদেশের এই কোচ তখন ড্রেসিংরুমে সময় কাটিয়েছেন!

পরিবর্তনের আভাসটা পাওয়া যায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর পর। দল দেশে ফেরার পর তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মুর্তজাসহ কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান বৈঠক করেছেন। যার রেশ হিসেবে জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টরের পদে বসেন খালেদ মাহমুদ সুজন। রবিবার মূল অনুশীলন শুরুর আগেই ৭/৮ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে সুজন কাজ করেছেন। এমনকি শুরুর দিন থেকে কোচিং স্টাফরা দলের সঙ্গে থাকলেও ডমিঙ্গোকে কিছুই করতে দেখা যায়নি। ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্স, পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসনও তার শিষ্যদের নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু হেড কোচকে কোথাও হাজির হতে দেখা যায়নি।

একই চিত্র ছিল সোমবারও। অনুশীলন শুরুর দুই ঘণ্টা পর ডমিঙ্গো মাঠে নামেন। শরীরী ভাষাতেও মনে হচ্ছিল তিনি বোধহয় প্রধান কোচ নন! বিশ্বকাপের পর যেন তার সব কিছু কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মাঠে আরেকটি দৃশ্যেরও অবতারণা হতে দেখা যায়। সকল ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফরা যখন এক সঙ্গে জড়ো হয়ে টিম মিটিং করছেন, ঠিক তখন পেছনে একাকী দাঁড়িয়ে ছিলেন ডমিঙ্গো! পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছিল, রাজ্য হারিয়ে বিষাদময় দিন পার করছেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান। পুরো সময়টাতে ক্রিকেটারদের নিয়ে কোন ভূমিকাতেই অংশ নিতে দেখা যায়নি তাকে। কেবলমাত্র বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমকে পেছনে ফেলে খালেদ মাহমুদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করতে দেখা গেছে।

পরিস্থিতি দেখে এটাই মনে হচ্ছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জন্য প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। সাবেক ক্রিকেটার মাশরাফিসহ অনেকেই মনে করেন, দলকে ঠিকমতো তৈরি করতে পারেননি তিনি। অবস্থা এমন যে বিসিবি চাইলেই তাকে বরখাস্ত করতে পারছে না। কেননা বিশ্বকাপের মাঝখানে আগামী দুই বছরের জন্য ডমিঙ্গোর সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

এখন হুট করে ডমিঙ্গোকে প্রধান কোচের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিলে বড় অঙ্কের খেসারত দিতে হবে বিসিবিকে। আনুষ্ঠানিক চুক্তি নবায়নের সময়ই ডমিঙ্গো একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন। এক বছরের ভেতর বিসিবি চাইলেও তাকে চাকরিচ্যুত করতে পারবে না। আর যদি কোন কারণে করেই, তাহলে তাকে এক বছরের বেতন দিয়ে দিতে হবে। এই অবস্থায় ডমিঙ্গোকে বিকল্প কোন দায়িত্ব দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে বিসিবি। সেই কারণেই হয়তো পাকিস্তান সিরিজে হেড কোচের তালিকায় তার নাম থাকলেও আদতে তিনি ক্ষমতাহীন!

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
এন এইচ, ১৫ নভেম্বর

Back to top button