ক্রিকেট

শেষ দুই ম্যাচে মন খুলে খেলার আহ্বান

ঢাকা, ০১ নভেম্বর – বাংলাদেশের বিশ্বকাপ আক্ষরিক অর্থেই শেষ হয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারের পর। সুপার টুয়েলভের বাকি ম্যাচ দুটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতলেও সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ নেই। গাণিতিক সূক্ষ্ণ সমীকরণ মেলানোর বৃথা চেষ্টা না করাই ভালো। সুপার টুয়েলভে এক নম্বর গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের বার্তা তেমনই। ইংল্যান্ড টানা তিন ম্যাচ জিতে সবার ওপরে। দক্ষিণ আফ্রিকা আর অস্ট্রেলিয়া তিনটি করে ম্যাচ খেলে চার পয়েন্ট করে নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে। বাংলাদেশকে হারিয়ে দুটি করে পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কা চতুর্থ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ পঞ্চম। বোঝাই যাচ্ছে, টেবিলের শীর্ষ তিন দলের মধ্যে হচ্ছে সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াই। সেদিক থেকে দেখলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আর হারানোর কিছু নেই। বরং শেষ দুই ম্যাচ (মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকা আর বৃহস্পতিবার অস্ট্র্রেলিয়ার বিপক্ষে) থেকে পাওয়ার আছে অনেক কিছু। দক্ষিণ আফ্রিকা বা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিততে পারলে আত্মবিশ্বাস নিয়ে দেশে ফিরতে পারবে পাকিস্তান সিরিজের জন্য। গতকাল জুম মিটিংয়ে ক্রিকেটারদের এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন আকরাম খান। বিষণ্ণতা ঝেড়ে ফেলে শেষ দুই ম্যাচে মন খুলে খেলার আহ্বান তার।

বাংলাদেশের পরের ম্যাচ কাল আবুধাবির শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। বাংলাদেশের মতো তারাও টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল হার দিয়ে। আবুধাবিতেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৫ উইকেটে হারলেও ছন্দে ফিরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে। সেমিফাইনালের পথে সহজ করতে বাংলাদেশকেও টার্গেট করবে তারা। সেক্ষেত্রে নেংটোর বাটপারের ভয় নেই এই কৌশল নিয়ে খেললে ভালো করবেন মাহমুদউল্লাহরা। বাড়ি ফেরার আগে প্রোটিয়াদের হারিয়ে গ্রুপটা এলোমেলো করে দিতে পারাও তো লাভ।

বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান গতকাল দুই ঘণ্টার জুম মিটিংয়ে মাহমুদউল্লাহদের এটাই বুঝিয়েছেন, ‘সবাই খুব মনমরা ছিল। ওদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করলাম। নেতিবাচক কথা বলে তো লাভ হবে না। সকালে (গতকাল) জুম মিটিংয়ে কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে বলেছি, খোলা মনে যেন খেলে। আমরা ম্যাচ হারলেও খেলা ভালো হয়েছে। শ্রীলঙ্কা বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে জিততে পারিনি সেটা আলাদা কথা। শেষ পর্যন্ত যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা গেছে, তা কম পাওয়া নয়। আর দুটি ম্যাচ বাকি আছে। জিততে পারলে দলের চেহারাই বদলে যাবে। আমাদের তো আর হারানোর কিছু নেই। ভালো কিছু করতে পারলে সেটা বোনাস। আমরা চাই চাপহীন ক্রিকেট খেলুক।’

কোচিং স্টাফের দিক থেকেও টিম মিটিংয়ে একই বার্তা দেওয়া হয়েছে। সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম জুনিয়রদের সাহস দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানায় দলের একটি সূত্র। যদিও শত চেষ্টা করলেও ক্রিকেটারদের মনের অবস্থা পরিবর্তন কারা যায়নি। দলের বর্তমান অবস্থা জানতে চাওয়া হলে একজন ক্রিকেটার নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘জঘন্য অবস্থা। কারও মুখের দিকেই তাকানো যাচ্ছে না। যার যার হাত থেকে ক্যাচ পড়েছে তারা মনে করছে তাদের কারণে হেরে গেছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ করতে না পারায় রিয়াদ ভাইয়ের মনের অবস্থাও ভালো নয়।’

এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দলগত পারফরম্যান্স করতে না পারলেও ব্যক্তিগতভাবে ভালো করছেন অনেকেই। পেসার তাসকিন আহমেদ ছন্দে আছেন। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের পারফরম্যান্সও ভালো। যদিও নিয়মিত ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তার। আকরাম খানও নাসুমকে খেলানোর পক্ষে।

টিম ম্যানেজমেন্টের একজন সদস্য বলছেন, নুরুল হাসান সোহানের ব্যথা কিছুটা কমেছে। উইকেটরক্ষক এ ব্যাটার ফোনে জানান, ব্যথা কিছুটা কমলেও ম্যাচ খেলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আজ সোহানের চোট পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে। তিনিও শেষ পর্যন্ত খেলতে না পারলে ১৩ জনের দলে পরিণত হবে বাংলাদেশ। সোহান উইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেননি। কিপিং করেছেন লিটন কুমার দাস। সোহান-লিটন দু’জনের কেউই বিশ্বকাপে অতটা ভালো করছেন না। বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানও ছন্দে নেই। গত ম্যাচে সবচেয়ে খরুচে বোলার ছিলেন তিনি। অফস্পিনার মেহেদী অধিনায়কের ভরসা। সব ম্যাচেই ভালো করছেন তিনি। শেষ দুই ম্যাচেও তার কাছ থেকে সেরাটা আশা করবে দল। এর চেয়েও বেশি চাওয়া দলগত পারফরম্যান্স।

সূত্র : সমকাল
এন এইচ, ০১ নভেম্বর

Back to top button