সিনহা হত্যা মামলা: ষষ্ঠ ধাপে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু আজ
কক্সবাজার, ২৫ অক্টোবর – কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলায় ষষ্ঠ দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে আজ সোমবার (২৫ অক্টোবর) । চলবে আগামী ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।
এরআগে পঞ্চম দফায় মামলার ৩৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ মামলায় মোট ৮৩ জন সাক্ষী রয়েছেন। ষষ্ঠ দফায় ২৫-২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৪ সাক্ষীকে সমন পাঠিয়েছেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, সাক্ষ্যগ্রহণের সময় কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজনভ্যানে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হবে।
অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে আমাদের প্রচেষ্টা রয়েছে। তবে আসামিপক্ষ সবসময় তাতে ব্যাঘাতের চেষ্টা চালাচ্ছেন। মামলার অন্যতম আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপের আইনজীবী মামলার দ্বিতীয় সাক্ষিকে রিকলের আবেদন করেছেন। এটি মামলার গতিশীল কার্যক্রমকে স্থবির করার পাঁয়তারা।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। তার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তার ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করে পুশি। তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এ দুজন পরে জামিনে মুক্তি পান।
সিনহা হত্যার ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পর পরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায় ও একটি রামু থানায়। ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের ৯ সদস্য। তারা হলেন-বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল সাগর দেব নাথ।
অপর আসামিরা হলেন- আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্য এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজিব ও মো. আব্দুল্লাহ এবং টেকনাফের বাহারছড়ার মারিষবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পুলিশের করা মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, মো. নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এর আগে আসামিদের তিন দফায় ১২ থেকে ১৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল।
গত ২৭ জুন ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামীর বিরুদ্ধে মামলাটির বিচারের জন্য অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর পাঁচ দফায় অনেকের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
সূত্র: জাগো নিউজ
এম ইউ/২৫ অক্টোবর ২০২১