শুধু পুলিশ আদেশ পালন করেছে, বাকিরা কোথায়?
ঢাকা, ২৫ অক্টোবর – অর্থপাচারের ঘটনায় শুধু পুলিশ মহাপরিদর্শক প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, বাকি ১৩ বিবাদী আট মাসেও প্রতিবেদন না দেয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন উচ্চ আদালত।
এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করার সময় আদালত বলেন, কেন আদালতের আদেশ প্রতিপালন করা হয়নি? শুধু পুলিশ আদেশ প্রতিপালন করেছে। বাকিরা কোথায়?। এটা ঠিক নয়, আমরা কোর্ট একটা আদেশ দিলাম। আমরা রুল দিয়েছি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। প্রায় এক বছর হয়ে গেল, রুলের জবাবটাই দাখিল করা হলো না। আর কী বলবো? এ নিয়ে কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’
রোববার (২৪ অক্টোবর) পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দাখিলের পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন। বাকি ১৩ বিবাদীকে প্রতিবেদন দিতে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেন হাইকোর্ট।
বিদেশি ব্যাংক, বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে পাচার করা ‘বিপুল পরিমাণ’ অর্থ উদ্ধারের যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস।
২৮ ফেব্রুয়ারি ওই রিটের শুনানি করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। সুইস ব্যাংকসহ অন্যান্য বিদেশি ব্যাংকে বাংলাদেশের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোনো সত্তাকে কত টাকা পাচার করেছে, পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনতে এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সে তথ্য জানতে চাওয়া হয়।
এই মামলায় ১৪ নম্বর বিবাদী ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক। এই আদেশ অনুসারে সিআইডির দেয়া এসব তথ্য পুলিশ মহাপরিদর্শকের পক্ষে গত ১২ জুলাই অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়।
এই প্রতিবেদনে ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ১৪ হাজার ৭৪৮ টাকা এবং ১০১ মিলিয়ন ইউএস ডলার পাচারের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কা থেকে ৩৪ দশমিক ৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। বাকি অর্থ যেসব দেশে পাচার হয়েছে সেগুলো উদ্ধারে তাদের মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্সের মাধ্যমে অনুরোধ করা হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ভারত ও ফিলিপাইনে পাচার করার কথাও বলেছে সিআইডি। এরমধ্যে ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কা থেকে ৩৪ দশমিক ৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
অর্থসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাণিজ্যসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের রেজিস্ট্রারকে আগামী ২১ নভেম্বর জবাব দাখিলের জন্য দিন ঠিক করে দেন উচ্চ আদালত।
সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এন এইচ, ২৫ অক্টোবর