ফুটবল

বাংলাদেশকে পুড়িয়ে নেপালের ইতিহাস

মালে, ১৩ অক্টোবর – হলো না! আশা জাগিয়েও স্বপ্ন পূরণ করতে পারল না বাংলাদেশ। নেপালের বিপক্ষে ড্রয়ে আরো একটা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ দুঃখ গাঁথাই হয়ে রইল জামাল ভূঁইয়াদের। অন্যদিকে হিমালয়ের দেশ নেপাল গড়ল ইতিহাস। প্রথমবারের মতো সাফের ফাইনালে জায়গা করে নিল দলটি।

বুধবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ১-১ ড্রয়ে সাফের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে নেপাল। যদিও ম্যাচের ৯ মিনিটেই সুমন রেজার গোলে লিড নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই লিড ধরে রাখা যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর লাল কার্ড-ই যেন এলোমেলো করে দিল সব।

পয়েন্টের জন্য মরিয়ে নেপালকে শেষ দিকে পেনাল্টি থেকে গোল এনে দেন অঞ্জন বিস্তা। সুবাদে টুর্নামেন্টে প্রথম দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করে নেপাল।

শনিবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নেপালের প্রতিপক্ষ হবে স্বাগতিক মালদ্বীপ অথবা ভারত। ফাইনাল নিশ্চিত করতে এদিন দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দল দুটি। ফাইনাল খেলতে হলে ভারতকে জিততেই হবে। অন্যদিকে মালদ্বীপের ড্র করলেই চলবে।

পাঁচ দলের রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির আসরে ৪ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালে পা দিল নেপাল। ৩ ম্যাচে মালদ্বীপের পয়েন্ট ৬, ভারতের ৫।

বাংলাদেশ ৪ ম্যাচে ১টি করে জয় ও ড্র এবং ২ হারে ৫ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে থেকে আসর শেষ করল। ১ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ দলের মধ্যে পঞ্চম হয়েছে শ্রীলঙ্কা।

বাংলাদেশ সবশেষ সাফের ফাইনাল খেলেছিল ১৬ বছর আগে, ২০০৫ সালে। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এদিন ফাইনাল নিশ্চিত করতে হলে জয় পেতেই হতো অস্কার ব্রুজোনের দলকে। অন্যদিকে নেপালের ড্র পেলেই চলত। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য পূরণ হয়েছে নেপালেরই।

মালদ্বীপের রাজধানী মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। ৯ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি কিকে হেডে জাল খুঁজে নিয়েছিলেন সুমন রেজা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের দর্শকদের স্বপ্ন তাড়িত করেছিলেন।

যদিও নেপালিরা দারুণ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। বারবার কাঁপিয়ে দিচ্ছিল বাংলাদেশের রক্ষণ। পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট ম্যাচে তাদের দাপটটা। ম্যাচে ৬৭ শতাংশ বল দখলে রেখে খেলেছে দলটি। অন টার্গেট শটে অবশ্য ৪-৩ এ এগিয়ে বাংলাদেশ। কিন্তু ফরোয়ার্ড এদিনও সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।

ম্যাচে বাংলাদেশ ফাউলও করেছে বেশি। ২০ বার বাংলাদেশের বিপক্ষে ফাউলের বাঁশি বাজিয়েছেন রেফারি। নেপালের বিপক্ষে ১২ বার।

ম্যাচে বাংলাদেশের সবচেয়ে করুণ গল্পটা লেখা হয় ৭৯ মিনিটে। বাঁচা মরার এমন ম্যাচে ওই সময় দশ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। সেটাও আবার লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে।

মিডফিল্ডার রাকিব হোসেনের ভুল পাস কাভার করতে বক্স ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছিলেন জিকো। এ সময় হাতে বল লাগে তার। রেফারি সরাসরি জিকোকে লাল কার্ড দেখান।

এতে ছক বদলে ফেলতে হয় কোচ ব্রুজোনকে। ফরোয়ার্ড লাইন থেকে বিপলুকে তুলে মাঠে নামানো হয় সিনিয়র গোলরক্ষকর আশরাফুল ইসলাম রানাকে। সেই সঙ্গে গোলদাতা সুমন রেজাকে তুলে মাঠে নামানো হয় মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদকে।

দশ জনের বাংলাদেশের ওপর চাপ বাড়িয়ে খেলতে থাকা নেপাল পেনাল্টি পায় ৮৬ মিনিটে। স্পট কিক থেকে গোল করেন বিস্তা। বাংলাদেশের ফাইনাল স্বপ্নের করুণ সমাপ্তি তাতে।

সবশেষ ২০১৮ সালের সাফে গ্রুপের শেষ ম্যাচে এই নেপালের বিপক্ষে হেরেই স্বপ্ন ভেঙেছিল বাংলাদেশের। বিদায় নিতে হয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকেই।

সূত্র : দেশ রূপান্তর
এন এইচ, ১৩ অক্টোবর

Back to top button