বিচিত্রতা

স্ত্রীর মন রাখতে ঘূর্ণমান বাড়ি

স্ত্রী মমতাজ মহলের জন্য তাজমহল গড়েছিলেন সম্রাট শাহজাহান। বসনিয়ার ৭২ বছর বয়সি স্বামী গড়েছেন এমন এক বাড়ি যার জানালায় বসে তার স্ত্রী পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ দেখতে পারেন ঘাড় একটুও না ঘুরিয়েই।

এই বাড়ির মালিকের নাম ভোয়িন কুসিচ। বয়স ৭২। অভিনব এ বাড়ি তৈরি করতে ছয় বছর লেগেছে তার। মাঝে কিছুদিন হাসপাতালে ছিলেন। হার্ট অ্যাটাকের কারণে হাসপাতালে গেলেও মাথা থেকে বাড়ির কাজ শেষ করার চিন্তাটা সরছিল না।

ডাক্তারকে তাই বলেছিলেন, ‘আমাকে অন্তত একটা বছর বাঁচিয়ে রাখুন। কারণ, মাথায় এমন একটা কাজের চিন্তা ঘুরছে, যা কিভাবে শেষ করতে হবে আমি ছাড়া কেউ জানে না।’

বসনিয়ার স্রবাচ শহরের এ বাড়ির যে কোনো দিকের যে কোনো জানালার সামনে দাঁড়ালে বা বসলে চারিদিক দেখা যায়। কুসিচের স্ত্রী একসময় বলতেন, শোবার ঘরটা অন্যদিকে নিতে যাতে বাড়ির পেছনের ফসলের ক্ষেতটা শুয়ে শুয়ে দেখে চোখ জুড়ানো যায়। আবার কখনো তার মন চাইতো বসার ঘরটা সামনের দিকে নিলে রাস্তার লোক চলাচল দেখতে কষ্ট করতে হতো না। তাই একদিন কুসিচ বলে ফেলেছিলেন, ‘তোমাকে আমি ঘুরন্ত বাড়ি বানিয়ে দেবো।’

কুসিচের বাড়িটার নীচে রয়েছে ইলেক্ট্রিক মোটর, আর সেনাবাহিনীর গাড়ির চাকা, যার সহায়তায় বাড়িটি ঘুরতে পারে। কুসিচ জানালেন, এমন একটি বাড়ি তৈরির প্রেরণা তিনি পেয়েছিলেন সার্বিয়ান-মার্কিনি উদ্ভাবক নিকোলা টেসলা আর মিহাইলো পাপিনের কাছ থেকে। তার মনে হয়েছিল টেসলা আর পাপিন যদি সাধারণ ঘরে জন্ম নিয়ে এত বড় বড় কাজ করতে পারেন, তাহলে তিনি একটা ঘুরন্ত বাড়ি বানাতে পারবেন না কেন?

বাড়িতে বসে এখন যে শুধু চারদিকের মনোরম দৃশ্য দেখা যায় তা-ই নয়, চাইলে অনেকটা নাগরদোলার মতো ঘোরাও সম্ভব। কারণ, সবচেয়ে দ্রুত গতিতে ঘুরলে মাত্র ২২ সেকেন্ডে এক পাক ঘুরতে পারে এই বাড়ি। আর সবচেয়ে মন্থর গতিতে ঘুরলে এক পাক ঘুরতে সময় লাগে ২৪ ঘণ্টা।

এমন বাড়িতে বাস করার অনুভূতি সবার কাছে বলতে লজ্জা পান কুসিচের স্ত্রী। তাই গণমাধ্যমের সঙ্গে এখনো কথা বলেননি তিনি। বাড়ি নিয়ে কুসিচ-ও বেশি কিছু বলতে চান না। তার উদ্ভাবনী শক্তির প্রশংসা করলে অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই বলে ওঠেন, ‘এটা বিশেষ কোনো উদ্ভাবন নয়, এটা করতে দরকার শুধু ইচ্ছাশক্তি আর জ্ঞান। আমার যথেষ্ট সময় আর জ্ঞান ছিল।’

এন এইচ, ১৩ অক্টোবর

Back to top button