জাতীয়

ডেসটিনি ও যুবকের আদলেই আল আমীন গড়ে তুলেন ‘এসপিসি ওয়ার্ল্ড’

ঢাকা, ০৪ অক্টোবর – প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘এসপিসি ওয়ার্ল্ড’ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আল আমীন ডেসটিনি ২০০০ এর উচ্চ পর্যায়ের টিম লিডার ও প্রশিক্ষক ছিলেন। ডেসটিনি ও যুবকের আদলেই তিনি এসপিসি ওয়ার্ল্ডকে গড়ে তুলেছেন। বিভিন্নভাবে প্রলোভন দিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানির হিসাব থেকে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা তিনি ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করেছেন। আজ সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, ‘এর আগে ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আল আমীন। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় এক কোটি। এক মাসের মধ্যে তারা প্রায় ৫/৬ কোটি টাকার অর্ডার পায়।’

পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, ‘প্রাথমিক অবস্থায় এসপিসি ওয়ার্ল্ড কিছু পণ্য ডেলিভারি করে সেই গ্রাহকদের দিয়ে তাদের ফেসবুক পেজে ইতিবাচক রিভিউ দিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে। পরবর্তীতে অধিক সংখ্যায় অর্ডার ও অগ্রিম অর্থ পেলে তারা পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে। অনেক দিন পেরিয়ে গেলে গ্রাহকেরা যখন বুঝতে পারেন, তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে প্রতিকার দাবি করে বক্তব্য দিতে থাকেন। যারা খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করেন, তাদের টাকা ফেরতের মিথ্যা আশ্বাস হিসেবে চেক প্রদান করা হয়। কিন্তু অপর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকায় চেক ডিজঅনার হওয়ায় গ্রাহকদের সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায়।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডির এলআইসি’র একটি চৌকস দল গতকাল রোববার রাতে এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আল আমীন (৩১) ও পরিচালক শারমীন আক্তারকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাদের হেফাজত হতে সাদা রংয়ের একটি এক্সিও ফিল্ডার প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানি লন্ডারিং ও প্রতারণা আইনে প্রায় ৪টি মামলার তথ্য রয়েছে সিআইডি’র কাছে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, সম্প্রতি কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণাকাণ্ডে অত্যন্ত উৎকণ্ঠায় রয়েছে গ্রাহক, ব্যবসায়ী এবং খাত সংশ্লিষ্টরা। ই-কমার্স সাইটগুলো ঈদ ধামাকা, সাইক্লোন অফার, ডাবল অফারসহ বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। এক্ষেত্রে ক্রীড়া ও শোবিজ জগতের সেলিব্রেটিদের মাধ্যমে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রচার করে তাদের ভক্ত ও তরুণদের আকৃষ্ট করে নিয়মিত গ্রাহকে পরিণত করেছে। ৫০ শতাংশ মূল্যছাড়ে নতুন মোটর সাইকেল, মুঠোফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, ওভেনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স পণ্য স্বল্প দিনের মধ্যে ডেলিভারি এবং শর্ত সাপেক্ষে ৮০ শতাংশ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশ ব্যাক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শর্ত ভঙ্গ করার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানি লন্ডারিং ও প্রতারণা আইনে মামলা হয়েছে।

সূত্র : আমাদের সময়
এন এইচ, ০৪ অক্টোবর

Back to top button