অপরাধ

কমিউটার ট্রেনে ডাকাতের হাতে যাত্রী খুন: গ্রেপ্তার ৫

ময়মনসিংহ, ২৬ সেপ্টেম্বর – ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনের ছাদে ডাকাতি ও দুইজন খুনের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

রোববার দুপুরের দিকে র‍্যাবের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে ময়মনসিংহ নগরীর শিকারীকান্দা ও বাঘমারা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় থেকে লুণ্ঠিত মোবাইল ও টাকা।

আটককৃতরা হলেন- আশরাফুল ইসলাম স্বাধীন (২৬), মাকসুদুল হক রিশাদ (২৮), মো. হাসান (২২), রুবেল মিয়া (৩১) ও মোহাম্মদ (২৫)।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে জামালপুরগামী কমিউটার ট্রেনের ছাদে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই যাত্রী খুন হন। আহত হন আরও একজন।

র‍্যাব-১৪ জানায়, ট্রেনের ছাদে ডাকাতি ও দুইজন খুনের ঘটনার পর থেকে র‍্যাবের গোয়েন্দারা তৎপরতা শুরু করে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, পারিপার্শ্বিকতা বিচার, নিহতের বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে শনিবার মধ্যরাতে সর্বপ্রথম আশরাফুল ইসলাম স্বাধীনকে ময়মনসিংহ নগরীর শিকারীকান্দা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে লুট হওয়া মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়।

পরে স্বাধীনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত মাকসুদুল হক রিশাদ, হাসান, রুবেল মিয়া ও মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র, টাকা ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব আরও জানায়, ঘটনার দিন ট্রেনে ডাকাতির উদ্দেশ্যে কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে চারজন পেশাদার ডাকাত দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে ওঠে। রিশাদ, হাসান এবং স্বাধীন টঙ্গী স্টেশন থেকে এদের সাথে যুক্ত হয়। ট্রেনটি ফাতেমানগর স্টেশনে থামলে তাদের সাথে যোগ দেয় মোহাম্মদসহ আরেক সহযোগী।

ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে দিলে তারা ট্রেনের ইঞ্জিনের পরের বগির ছাদে বসে থাকা যাত্রীদের মোবাইল ও টাকা লুট করা শুরু করে। ডাকাতির এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী মৃত সাগর মিয়া ও নাহিদ বাধা দিলে তাদের সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে ভিকটিমদের মাথায় আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে সাগর ও নাহিদ লুটিয়ে পড়লে ডাকাতরা ময়মনসিংহ রেল স্টেশনে প্রবেশের আগে সিগন্যালের কাছে নেমে পালিয়ে যায়।

র‍্যাব-১৪’র উইং কমান্ডার রুকুনুজ্জামান জানান, এ চক্রটি নিয়মিত ডাকাতি করে আসছে। এরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এরা ঢাকার কমলাপুর, এয়ারপোর্ট ও টঙ্গী রেল স্টেশন থেকে ডাকাতি-ছিনতাই করতে ট্রেনে ওঠে। এদের সহযোগী গফরগাঁও-ফাতেমানগর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে সম্মিলিতভাবে ডাকাতি ও ছিনতাই করে ময়মনসিংহ স্টেশনে নেমে যায়।

তিনি আরও বলেন, এই চক্র ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে ডাকাতি ও ছিনতাই করতো। এ গ্রুপগুলোর কেউ টার্গেট শনাক্ত করতো, কেউ নিরাপত্তা দেখতো, কেউ লুট করা মালামাল বিক্রি করতো। রিশাদ এ চক্রের মূল হোতা। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

Back to top button