কক্সবাজার

ভোটকেন্দ্রে গোলাগুলিতে আ.লীগ নেতাসহ ২ জন নিহত

কক্সবাজার, ২০ সেপ্টেম্বর-কক্সবাজারের কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে ভোটকেন্দ্রে গোলাগুলিতে আওয়ামী লীগ নেতাসহ দুজন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন— নৌকার এজেন্ট আবদুল হালিম (৩৫) ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক আবুল কালাম (৩৮)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে আবদুল হালিম নিহত হন।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কুতুবদিয়া সরকারি কলেজকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ রয়েছে।

আবদুল হালিম বড়ঘোপ ইউনিয়নের গোলদারপাড়া এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে এবং ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে। নির্বাচনে তিনি ৫নং ওয়ার্ডের পিলটকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট ছিলেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মাঝে আহত ১৮ জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. শরীফ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিছু লোক ভোটকেন্দ্রে উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এটি ঠেকাতে জটলার ভেতর ঢুকে যান হালিম। ছিনতাই ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদস্য গুলি চালালে গুলিতে আবদুল হালিম আহত হন। তাকে উদ্ধার করে কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কুতুবদিয়া থানার ওসি মো.ওমর হায়দার ভোটকেন্দ্রে গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা নিয়ন্ত্রণের সময় আবদুল হালিম নামে একজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন। তার লাশ কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে হালিম নিহত হয়েছেন।

ঊড়গুপ ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা জামশেদুল ইসলাম সিকদার বলেন, ওই কেন্দ্রে আপাতত ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, গোলাগুলির ঘটনা শুনেছি। তবে কাদের গুলিতে নিহত হয়েছে, তা সঠিকভাবে এখনও জানা যায়নি।

এদিকে মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নে নৌকার সমর্থকের গুলিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থক নিহত হয়েছেন।

নিহতের নাম আবুল কালাম। তিনি স্থানীয় পশ্চিমপাড়ার ছোট মিয়ার ছেলে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়।

সূত্র জানায়, মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ সকাল ৮টায় শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নৌকার প্রার্থী শেখ কামালের পক্ষে কিছু যুবক ভোটকেন্দ্রে এবং রাস্তায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালান।

এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারফ হোসেন খোকন (চশমা) সমর্থিত লোকজন বাধা দিলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় নৌকা সমর্থিত লোকজনের গুলিতে চশমা সমর্থিত আবুল কালাম ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন।

পরে তাকে উদ্ধার করে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় আহত আরও গুলিবিদ্ধ ১০ জন মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।

ঘটনার পর পরই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিজিবি ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পাশাপাশি কুতুবজোম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জামিয়া সুন্নাহ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

কুতুবজোম ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম মাসুদ কুতবী জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নৌকা ও চশমার সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় কয়েক ঘণ্টার জন্য ৪ ও ৫নং কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। পাশাপাশি ভোটগ্রহণও শুরু হয়েছে।

মহেশখালী থানার ওসি আবদুল হাই জানান, বর্তমানে কুতুবজোম ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ভোটগ্রহণও চলছে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে কঠোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

সূত্রঃ যুগান্তর

আর আই

Back to top button