অপরাধ

চেতনানাশক মেশানো খাবার খাইয়ে গাড়ি ছিনতাই করতো তারা

ঢাকা, ২৮ আগস্ট – মুহূর্তেই যেকোনো গাড়ির লক (তালা) ভাঙা কিংবা বিকল্প চাবি ব্যবহার করে গাড়ি স্টার্ট (চালু) দিয়ে চুরি করে নিয়ে যেত একটি চক্র। এমনকি গাড়ি শনাক্তের জিপিএস ট্রাকিং ডিভাইসও বিকল করে গাড়ি নিয়ে পালাতো তারা।

এরপর গাড়ির মালিককে ফোন করে অর্থ আদায় কিংবা গাড়ি বিক্রি করে দেয় চক্রটি। তারা চালককে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো খাবার খাইয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেতো।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এমন একটি সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৪)।

চক্রটি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শতাধিক গাড়ি ছিনতাই ও চুরি করে, যার মাধ্যমে অন্তত কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে তারা।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত র‌্যাব-৪ এর অভিযানে তাদের আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা তিনটি পিকআপ, একটি সিএনজি, একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, তিনটি ছুরি, একটি চাইনিজ কুড়াল ও ছয়টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

আটকরা হলেন- আজিম উদ্দিন (৩৮), রফিক উল্লাহ (২৬), সেলিম (৫০), কামরুল হাসান (২৬) ও ওমর ফারুক (২৫)।

শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গত ১১ আগস্ট রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে গাড়ি ছিনতাই চক্রের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ থেকে মূলহোতা আজিমসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। এ চক্রে ১৫-২০ জন জড়িত। পাঁচ-ছয় বছর ধরে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইতোমধ্যে শতাধিক গাড়ি ছিনতাই করেছে।

চক্রটি ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটসহ নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের আশপাশ এলাকায় পিকআপ, সিএনজি ছিনতাই করে আসছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথমত চক্রের সদস্যরা ছদ্মবেশে গাড়ি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। আরেকটি গ্রুপ মাঠ পর্যায় থেকে গাড়ি ছিনতাই করে। এ গ্রুপে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চালক ও মেকানিকরাও থাকে। যাতে নির্বিঘ্নে ছিনতাই বা চুরি করা গাড়ি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে পারে। পার্কিং অবস্থায় গাড়ির লক ভেঙে নিয়ে যাওয়াসহ ছদ্মবেশে চালককে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো খাবার খাইয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরের ধাপে সেসব গাড়ি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় লুকিয়ে রাখে। গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা নিয়ে গাড়ি ফেরত দেয়। আবার কখনো গাড়ির রং পরিবর্তন করে বিক্রি করে কিংবা গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করে।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, সিন্ডিকেটের সদস্যদের নামে রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা ও গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তারা বিভিন্ন মামলায় আটক হয়ে জেলে গিয়ে একে অপরের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে চক্রের সদস্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করে।

সূত্র : জাগো নিউজ
এন এইচ, ২৮ আগস্ট

Back to top button